• ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

ভয়াবহ তোপের মুখে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু

admin
প্রকাশিত ০২ সেপ্টেম্বর, সোমবার, ২০২৪ ২১:০৭:৩৪
ভয়াবহ তোপের মুখে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু

ফাইল ছবি।
মর্নিংসান অনলাইন ডেস্ক //

গাজার একটি সুড়ঙ্গ থেকে ছয় জিম্মির লাশ উদ্ধারের পর থেকে ভয়াবহ তোপের মুখে পড়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। নিজ দেশের মানুষের কাছেই শুনছেন কটাক্ষ। জিম্মি উদ্ধারে তার (নেতানিয়াহু) ব্যর্থতার কথাই বারবার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে ইসরাইলিরা। এসব কিছুর জন্য নেতানিয়াহুই দায়ী- এমন অভিযোগই তুলছেন তারা। শুধু অভিযোগই নয়, সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ঝাড়তে পথেও নেমেছেন হাজারো মানুষ। রোববার থেকে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ইসরাইলি বিভিন্ন সংগঠন ও রাজনৈতিক দলও।

এছাড়া সোমবার ইসরাইলজুড়ে ধর্মঘট ডেকেছে দেশটির বৃহত্তম শ্রমিক ইউনিয়ন হিস্টাড্রুটও। ইতোমধ্যে তেলআবিবসহ বিভিন্ন অঞ্চলের সাধারণ মানুষ তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়াও শুরু করেছে। আলজাজিরা, মিডল ইস্ট আই।

বিক্ষোভকারীরা বলছেন, নেতানিয়াহুর কারণেই জীবিত অবস্থায় ফিরতে পারেননি জিম্মিরা। কারণ তিনি (নেতানিয়াহু) হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে সম্মত হননি। অথচ ৩০০ দিনেরও বেশি সময় ধরে হামাসের কাছে জীবিত ছিলেন তারা। আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় ১১ মাস আগে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরাইলের শুরু হওয়া সবচেয়ে বড় সরকারবিরোধী বিক্ষোভের মধ্যে রোববার রাতে বিক্ষোভকারী এবং নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের খবরও পাওয়া গেছে।

বিক্ষোভকারীরা স্লোগানের মাধ্যমে নেতানিয়াহুকে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি করে বাকি বন্দিদের দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানান। ইসরাইলি শহরগুলোতে বিক্ষোভকারীদের বেশির ভাগই ইসরাইলি পতাকা নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবেই মিছিল করছিল। তবে তেলআবিবে বিক্ষোভরত জনতা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে একটি প্রধান মহাসড়ক অবরোধ করেন। এ সময় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ তাদের ওপর জলকামান নিক্ষেপ করে এবং বিক্ষোভকারীদের মধ্য থেকে ২৯ জনকে আটক করে।

এরই মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর করার জন্য সরকারকে চাপ দিতে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ইসরাইলের বৃহত্তম ট্রেডস ইউনিয়ন ফেডারেশন হিস্টাড্রুটও। গত বছরের ৭ অক্টোবরের পর প্রথমবারের মতো এ পদক্ষেপ নিলো তারা। ইসরাইলের প্রধান বিমান পরিবহণ কেন্দ্র বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর সোমবার সকাল ৮টা থেকে বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছে ইউনিয়নটি। এ ছাড়া ধর্মঘটের সময় ব্যাংকিং এবং স্বাস্থ্যসেবাসহ ইসরাইলের অর্থনীতির প্রধান খাতগুলোকে বন্ধ বা কার্যক্রম ব্যাহত করার লক্ষ্যও নিয়েছে এই ইউনিয়ন। হিস্টাড্রুটের প্রধান আর্নন বার-ডেভিড বলেছেন, ‘একটি চুক্তি অন্য যেকোনো কিছুর চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমরা চুক্তির পরিবর্তে লাশের ব্যাগ পাচ্ছি।’

ইসরাইলের অর্থনৈতিক কেন্দ্র তেলআবিবের পৌর পরিষেবাগুলোও সোমবারের এই ধর্মঘটে বন্ধ থাকবে। ইসরাইলের ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, তারা এই ধর্মঘটকে সমর্থন করেছে এবং বন্দিদের জীবিত ফিরিয়ে আনতে সরকার তার ‘নৈতিক দায়িত্ব’ পালনে ব্যর্থ হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে। এদিকে শ্রমিকরা যেন বিক্ষোভে অংশ না নেন সেজন্য ইতোমধ্যেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসরাইলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ। তিনি বলেছেন, যারা শ্রমিক ধর্মঘটে অংশ নেবেন তাদের বেতন দেওয়া হবে না।

এদিকে ইসরাইলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান বিরোধীদলীয় নেতা ইয়াইর লাপিদও নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, নেতানিয়াহু ও তার মন্ত্রিপরিষদের কারণে বন্দিরা জীবিত ফিরতে পারেননি। অন্যদিকে, ছয় বন্দির মরদেহ উদ্ধারের পর চাপে পড়ে একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন নেতানিয়াহু। তিনি দাবি করেছেন, গত ডিসেম্বর থেকেই হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন তিনি। কিন্তু হামাস রাজি হচ্ছে না। তিনি বলেছেন, গত ১৬ আগস্টও যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া নতুন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হয়েছিল ইসরাইল। কিন্তু হামাস এতে রাজি হয়নি। কিন্তু হামাস জানিয়েছে, ইসরাইলি বাহিনী যে ছয় বন্দির মরদেহ উদ্ধার করেছে তাদের মধ্যে তিনজনকে চুক্তি হলেই মুক্তি দেওয়া হতো।