আদালত প্রতিবেদক //
রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলার আসামি দুই পুলিশ সদস্যকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আবু সাঈদ হত্যা মামলার আসামি রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের এএসআই মো. আমির হোসেন ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্রকে আদালতে আনে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই।
রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক মো. আসাদুজ্জামানের কাছে পিবিআই রিমান্ডের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। নতুন করে পিবিআই রিমান্ড আবেদন না করায় আদালত তাদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
এর আগে ১০ আগস্ট একই আদালতের বিচারক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন। তদন্ত সংস্থার পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়েছিলেন।
কোর্ট পরিদর্শক প্রীথিশ কুমার জানান, চার দিনের রিমান্ডে থাকা অবস্থাতেই দুই পুলিশ সদস্য অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের চিকিৎসা শেষে বিষয়টি আদালতকে জানানো হয়। আদালত তাদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এদিকে রিমান্ডের মেয়াদপূর্তির আগেই আসামিদের আদালতে উপস্থাপন, পুলিশ কর্মকর্তারা আসামি হলেও স্বপদে বহাল থাকা, নতুন করে কোনো আসামিকে গ্রেফতার না হওয়া, নতুন করে রিমান্ড না নেওয়ায় পিবিআইয়ের তদন্ত নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবীরা। সেই সঙ্গে সঠিক বিচার না পাওয়ারও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।
বাদীপক্ষের আইনজীবী রায়হানুজ্জামান রায়হান বলেন, আদালতে আসামিদের উপস্থাপনের দিনে এএসআই আমির আলী ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র আদালতে স্বীকারোক্তি দিতে ধরেছিল। পিবিআই সেই সময় আদালতের কাছে তাদের পাঁচ দিন রিমান্ড আবেদন করলে আদালত ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। তদন্তকারী সংস্থা রিমান্ডের তৃতীয় দিনেই আসামিকে আদালতে উপস্থাপন করেছে এবং বলেছে আসামিরা অসুস্থ। আদালতে আসামিরা কোনো স্বীকারোক্তি দেয়নি। আমাদের সন্দেহ হচ্ছে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্তে অবহেলা ও খামখেয়ালি করেছে। সেই সঙ্গে সঠিক বিচার নিয়ে সন্দেহ হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এ মামলার আসামি সবাই পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। মামলা ফাইলের দিনে আদালত নির্দেশনা দিয়েছিলেন, মামলার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত পুলিশের সব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে হবে কিন্তু এখনো স্বপদে বহাল থাকায় তারা মামলাকে প্রভাবিত করতে পারে। রোববারের মধ্যে তদন্তকারী সংস্থা পুনরায় রিমান্ড না চাইলে আমরা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার পরিবর্তন চাইব।
বাদীপক্ষের আরেক আইনজীবী শামীম আল মামুন বলেন, আসামি দুজন যাদের নির্দেশে গুলি চালিয়েছে, তাদের পেছনে পুলিশের কোন কোন কর্মকর্তা ছিল তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতকে বলেছে তারা রিমান্ডে আসামিদের দেওয়া তথ্য মিলিয়ে দেখছে। প্রয়োজন হলে পরবর্তীতে রিমান্ড চাইবে।
উল্লেখ্য, গত ১০ সেপ্টেম্বর পিবিআই দুই পুলিশ সদস্যের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
Editor and Publisher : Nityananda Sarkar,
News Editor- Arun Sarkar.