মর্নিংসান অনলাইন //
কক্সবাজার জেলা সদর উপজেলা এবং উখিয়া উপজেলার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৃথক পাহাড়ধসের ঘটনায় দুই পরিবারের ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ভোররাত ৩টায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পাহাড়ধসে কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ ডিককূল এলাকায় মারা গেছেন মা ও দুই মেয়ে। আর উখিয়া উপজেলার ১৪ নম্বর হাকিমপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মারা গেছেন তিন সহোদর।
ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন ঝিকু বলেন, এদিন ভোররাত ৩টার দিকে ভারী বৃষ্টি হওয়ার সময় আকস্মিক বিকট শব্দে দক্ষিণ ডিককূলের মিজানুর রহমানের বাড়ির ওপর পাহাড় ধসে পড়ে। এতে গৃহকর্তাসহ পরিবারের চারজন মাটিচাপা পড়েন। তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবেশীরা মিজানুরকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হলেও পরে মাটি সরিয়ে অপর তিনজনকে মৃত উদ্ধার করেন।
নিহতরা হলেন-মিজানুর রহমানের স্ত্রী আখি মনি (২১) এবং তাদের দুই মেয়ে মিহা জান্নাত নাঈমা (৫) ও লতিফা ইসলাম (১)।
ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মিজানুর রহমান জানান, মিজানের বাড়িটি খাড়া পাহাড়ের পাদদেশে। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টিতে মাটি নরম হয়ে যায়। পরে মধ্যরাতে অব্যাহত ভারী বর্ষণের সময় পাহাড় ধসে বাড়ির ওপর পড়েছে।
পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কক্সবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী। পরে তিনি ভুক্তভোগী পরিবারকে ৭৫ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করেন।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দৌজা নয়ন বলেন, অব্যাহত ভারী বর্ষণে উখিয়ার ১৪ নম্বর হাকিম পাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড়ধসে তিনটি বসতঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে মাটিচাপায় একই পরিবারের তিন সহোদরের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন-ক্যাম্পের ই-২ ব্লকের কবির আহমেদের ছেলে আব্দুর রহিম, আব্দুল হাফেজ ও আব্দুল ওয়াহেদ। পরে খবর পেয়ে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকেরা বিধ্বস্ত ঘর বাড়িতে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে মাটি সরিয়ে তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার করেন।
গত বুধবার থেকে কক্সবাজারে মাঝারি থেকে কখনো কখনো ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। এতে জেলা শহরসহ অর্ধশতাধিক গ্রামে বৃহস্পতিবার থেকে মারাত্মক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি ও পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলে অনেকের বাড়ি ঘর প্লাবিত হয়েছে। এতে জনজীবনে দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারি আবহাওয়াবিদ আব্দুল হান্নান জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৭ ঘণ্টায় মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৪০১ মিলিমিটার। চলতি মৌসুমে এটি একদিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড।
Editor and Publisher : Nityananda Sarkar,
News Editor- Arun Sarkar.