• ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সিলেটের জৈন্তা-গোয়াইনঘাটে বালু মহাল নিয়ে চলছে রমরমা চাঁদা আদায় বাণিজ্য!

admin
প্রকাশিত ২১ সেপ্টেম্বর, শনিবার, ২০২৪ ০৩:১৫:০০
সিলেটের জৈন্তা-গোয়াইনঘাটে বালু মহাল নিয়ে চলছে রমরমা চাঁদা আদায় বাণিজ্য!

জামাল আহমেদ, স্টাফ রির্পোটার, সিলেট //


সিলেটের জৈন্তাপুর-গোয়াইনঘাট উপজেলার বালু মহালে চলছে রমরমা চাঁদা আদায় বাণিজ্য। নামেমাত্র উপজেলা প্রশাসন চাঁদা আদায় বন্ধে দু-একটি অভিযান পরিচালনা করলেও রহস্যজনক কারণে বন্ধ হচ্ছেনা অবৈধ বালু উত্তোলনের মহোৎসব।

স্থানীয়দের অভিযোগ শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর হাত বদল হয়ে কথিপয় অসাধু প্রভাবশালি ব্যাক্তি স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে চলছে চাঁদা আদায় বাণিজ্য। এ থেকে বাদ নেই কতিপয় অসাধু হলুদ সংবাদকর্মীরাও।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার লেঙ্গুরা বালু মহাল ০৫.৪৬.৯১০০.০০৮.৫২.০০৫.২১.৬৭৪ নং- স্বারকে এবং জৈন্তাপুর উপজেলার সারি নদী (১) বালু মহাল ০৫.৪৬.৯১০০.০০৮.৫২.০৪৮.২০.৬৭৩ নং স্বারকে ১৪৩১ বাংলা সনের জন্য লিজ দেওয়া হয় এস এল এন্টারপ্রাইজ নামক একটি প্রতিষ্ঠানকে। সেই প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী গোয়াইনঘাট উপজেলার গোয়াইন গ্রামের নলিনী কান্ত দাশ এর পুত্র যুবলীগ নেতা সুভাস দাশ।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পরিবর্তনের পর সুভাস দাশ পালিয়ে যান। ইজারাদার পলাতক থাকার সুযোগ কাজে লাগিয়ে লেঙ্গুরা এলাকার বাসিন্দা গোয়াইনঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগ সদস্য গোলাম কিবরিয়া রাসেল নামের এক ব্যক্তি ক্ষমতার দাপুট দেখিয়ে তাহার চাচাত ভাই রব্বানী ও হাবিব গংদের সাথে নিয়ে বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে প্রকাশ্যে দিবালোকে লেঙ্গুরা ও সারি নদী ১ বালুমহাল থেকে ছোট নৌকা ৭-৮ হাজার এবং বড় নৌকা ১৪-১৬ হাজার টাকা করে ৩ শতাধিক নৌকা থেকে দৈনিক বড় অংকের চাঁদা হাতিয়ে নিয়ে অল্পদিনে বনে যাচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকার মালিক। অথচ প্রশাসন চাঁদাবাজি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিয়ে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।

চাঁদা আদায় প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সুভাস দাশ’র মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার কোন বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। অপরদিকে গোলাম কিবরিয়া রাসেল’র সহীত মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার ফোন রিসিভ না হওয়ায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ ব্যপারে জানতে গোয়াইনঘাট উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি প্রতিবেদক’কে বলেন, লেঙ্গুরা বালু মহাল লিজ হয়েছে তবে প্রতিষ্ঠানের নাম মনে নেই। চাঁদাবাজির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেরকম কোন তথ্য তার কাছে নেই।

এ বিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গোয়াইনঘাট এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, নকল রশীদ দিয়ে একটি চক্র লেঙ্গুরা বালু মহালে চাঁদাবাজি করছে বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি, এবং ইজারাদার পলাতক রয়েছেন দুটি বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছে। বলগেইট আটকে একটি মামলা এবং চাঁদাবাজি নিয়ে আরেকটি মামলা করেছি গোয়াইনঘাট থানায়।

এনিয়ে গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ শাহ হারুন রশীদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি লেঙ্গুরা বালু মহালে চাঁদাবাজির বিষয়সহ দুটি মামলার কথা নিশ্চিত করে বলেন আমরা শীগ্রই চাঁদাবাজদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করতেছি।

এদিকে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)’র সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, কেউ চাঁদাবাজির অভিযোগ করেনি, আর বিষয়টি আমার জানা নেই, তবে কেউ অভিযোগ করলে আমি ব্যবস্থা নিবো। অনেকে আবার সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে অভিযোগ করেন, আমি খোঁজ নিয়ে দেখবো অভিযোগ হয়েছে কিনা।

এ ব্যপারে জানতে জৈন্তাপুর থানার অফিসার ইনচার্জের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সারি নদী ১ এর বালু মহাল নিয়ে আমার কাছে কোন অভিযোগ নেই। তবে ইউএনও মহোদয় থেকে যদি পুলিশের প্রয়োজন হয় তাহলে অবশ্যই পুলিশ পাশে থাকবে।