মর্নিংসান অনলাইন //
অব্যাহত বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলের কারণে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করেছে। পানির চাপ সামলাতে না পেরে খুলে দেওয়া হয়েছে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪ জলকপাট। পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া শাখার উপ-প্রকৌশলী মোহাম্মদ রাশেদীন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, শুক্রবার ও শনিবার দুই দিন পর্যন্ত রংপুর বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে অতিভারি বৃষ্টিপাতের প্রবণতা আছে। এর ফলে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি সমতল আগামী দুই দিন পর্যন্ত দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে এবং পরবর্তী এক দিন নদীগুলোর পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে। আগামী দুই দিন লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার তিস্তা নদীর পানি সমতল সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে।
শুক্রবার দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে সকাল ৯টায় পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫১ দশমিক ৭৬ সেন্টিমিটার। যা (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার) বিপৎসীমার দশমিক ৩৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) রংপুরের উপ-সহকারী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল ৯টায় তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ২৮ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার। যা (স্বাভাবিক ২৯ দশমিক ৩১ সেন্টিমিটার) বিপৎসীমার দশমিক ৫৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে সকাল ৬টায় বিপৎসীমার দশমিক ৬১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়।
এছাড়াও সকাল ৯টার দিকে কুড়িগ্রামের ব্রক্ষ্মপুত্র নদের চিলমারী পয়েন্টে ২০ দশমিক শূন্য চার সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ২৩ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার), দুধকুমার নদের পাটেশ্বরী পয়েন্টে ২৬ দশমিক ৬৪ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ২৯ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার), ধরলা নদীর কুড়িগ্রাম পয়েন্টে ২২ দশমিক ৯০ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ২৬ দশমিক ০৫ সেন্টিমিটার), গাইবান্ধার যমুনা নদীর ফুলছড়ি পয়েন্টে ১৫ দশমিক ২৬ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ১৯ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার), ঘাঘট নদের গাইবান্ধা পয়েন্টে ১৭ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ২১ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার) পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে। সূত্র বলছে, রংপুর বিভাগের কোনো নদ-নদীতে বিপৎসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে না।
এদিকে প্রতিদিনের বৃষ্টিপাত আর উজানের ঢলে পানি বৃদ্ধির ফলে রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার সব নদ-নদীর পানির পাশাপাশি বিলের পানি বৃদ্ধিও অব্যাহত আছে। এতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় বসতবাড়ি ও রাস্তাঘাট ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে। সেই সঙ্গে ফসলি জমিতে পানি ওঠায় নষ্ট হচ্ছে আগাম শীতকালীন শাকসবজি ও বীজতলাসহ বিভিন্ন ফসল।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ আবহাওয়াবিদ মো. মোস্তাফিজার রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুর জেলায় ১৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।