ঢাকা //
আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা কোন পথে দিয়ে, কার ইঙ্গিতে দেশ থেকে পালালো তাদের শ্বেতপত্র প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক। তিনি বলেছেন, রাষ্ট্রপতিসহ সচিবালয়ে আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন শেখ হাসিনা। সচিবালয় যখন শেখ হাসিনার প্রেতাত্মার বসে থাকে তখন শহীদ সাইদ-মুগ্ধের কথা ভেবে চোখে পানি চলে আসে। শেখ হাসিনার প্রেত্মাতারা এখনো সক্রিয়, ষড়যন্ত্রের গন্ধ আমাদের নাকে আসে। এই ষড়যন্ত্র থেকে আপনাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) বের হতে হবে।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরামের উদ্যোগে ‘ড. ইউনূস সরকারকে ব্যর্থ করতে পরাজিত শক্তির ষড়যন্ত্র ও রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন চুপ্পু এবং শেখ হাসিনার নিয়োগপ্রাপ্ত সচিবসহ প্রশাসনের সর্বস্তরের ক্যাডারদেরকে বহিষ্কারের দাবিতে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মো. সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, ওলামা দলের সাবেক আহ্বায়ক মাওলানা নেছারুল হক, মৎস্যজীবী দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজী প্রমুখ।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার উদ্দেশ্য জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার কতোজন লোককে গ্রেপ্তার করেছেন? বিদেশে বসে খুনীরা যারা দেশের বিরুদ্ধে কথা বলছেন, জনগণের চাওয়া তাদেরকে দেশে এনে বিচার করুন। ৪৬০ থানার ওসিদের আইনের আওতায় আনুন, তারা বলতে পারবে কোথায় আছে ছাত্রলীগ যুবলীগের অবৈধ অস্ত্র।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নির্দেশে বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীকে গুম করা হয়েছে, লক্ষ মায়ের বুক খালি করেছেন সেই গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার বক্তব্য কেনো ফেসবুকে প্রচার হচ্ছে? আওয়ামী শাসনামলে আমাদের নেতা তারেক রহমান ও খালেদা জিয়ার কোনো বক্তব্য প্রচার করতে পারেনি কোনো গণমাধ্যম। তাই খুনী শেখ হাসিনা ও তার ছেলে জয়ের বক্তব্য কিভাবে গণমাধ্যমে আসে তা জনগণ জানতে চায়।
জয়নুল আবদিন ফারুক আরো বলেন, ডিবি হারুন ও বিপ্লব কুমার সরকারের অত্যাচারের কথা মনে পড়লে এখনো চোখে পানি চলে আসে। দেশের ছাত্র-শ্রমিক-জনতা মুক্তিযুদ্ধ করলেও শেখ হাসিনা বলতেন এই দেশ স্বাধীন করেছে আমার বাবা, এটা আমার বাবার দেশ। তাই আজকে এই অহংকার পতনের হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্য বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, আমরা যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন চাই। আমাদের ওপর ভরসা রাখবেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন, এই বিপ্লবী সরকারকে টিকিয়ে রাখতে হবে। ছাত্রলীগ-যুবলীগ আবারো অস্ত্র হাতে মানুষ খুন করুক, এটা আমরা চাই না। আইন নিজের হাতে তুলে নেব না কিন্তু কতক্ষন ধৈর্য ধরে রাখবো জানিনা। আপনারা ১৮ কোটি মানুষের জন্য একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেবেন, সেই নির্বাচন বিশ্বে ইতিহাস হয়ে থাকবে। একইসঙ্গে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ভাঙার আহ্বান জানান তিনি।
ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, এই সরকার ব্যর্থ হলে চরম মূল্য দিতে হবে। কারণ এই সরকারের অনেকে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। ইতোমধ্যে সরকারের একজনের উপদেষ্টার ব্যাপারে সবাই আপত্তি জানিয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে নির্বাচন দেন, তাহলে আপনারা সফল হবেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মামলা প্রত্যাহারের দাবিও জানান তিনি।
সভাপতির বক্তব্য সাইদুর রহমান বলেন, হাজার হাজার কোটি টাকা যারা বিদেশে পাচার করতে সহায়তা করেছে তারা এখনো বহাল তবিয়তে বসে আছে। প্রতিটি জেলায় ডিসি নিয়োগ দেয়া হচ্ছে, তারাও বিগত দিনের আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী। এমপি-মন্ত্রীরা কিভাবে দেশ থেকে পালালো? আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ডিবি হারুন ও বিপ্লব গ্রেপ্তার করতে হবে, না হলে আমরা রাজপথে কঠোর অবস্থান নিতে বাধ্য হবে বলেও হুশিয়ার দেন তিনি।