মর্নিং সান অনলাইন //
জামালপুরের মাদারগঞ্জে নাশকতা মামলার প্রধান আসামি ও আওয়ামী লীগ নেতাকে নিয়ে পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন উপজেলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাইযুল ওয়াসীমা নাহাত এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর আলম।
পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের বেশ কয়েকটি ছবি ইউএনও মাদারগঞ্জ জামালপুর নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট করা হয়। ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় বিষয়টি নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। শনিবার (১২ অক্টোবর) ইউএনও মাদারগঞ্জ জামালপুর ফেসবুক আইডি থেকে ছবিগুলো সরিয়ে নিয়েছেন ইউএনও।
ছবিতে দেখা যায়, গত ১০ অক্টোবর নাশকতা মামলার আসামি সিধুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুব আলম মিরনকে নিয়ে আদারভিটা ও সিধুলী ইউনিয়নের পাল্লাবাড়ী মন্দিরসহ কয়েকটি পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন ইউএনও। সেখানে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সায়েদা খানম লিজা, মাদারগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর আলম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইবরাহিম খলিল, পল্লী বিদ্যুৎতের ডিজিএম ওবায়দুল হক মাসুম, উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া তমাল, উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা রুহুল আমীন, সমাজসেবা কর্মকর্তা তৌফিকুল ইসলাম খালেক, উপজেলা তথ্য কর্মকর্তা দীপা খাতুনসহ পূজা উদযাপন কমিটি এবং উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরিদর্শনের ছবি গত বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) রাত ৮ টা ৪০ মিনিটে ইউএনও মাদারগঞ্জ জামালপুর নামের ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট করা হয়। ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২ সেপ্টেম্বরের মাদারগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সিধুলী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান রতন বাদী হয়ে মাদারগঞ্জ মডেল থানায় একটি নাশকতার মামলা করেন। মামলায় সিধুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুব আলম মিরনকে প্রধান আসামি করে ৫৩ জনের নাম উল্লেখ এবং নাম পরিচয়হীন আরও ৩০/৪০ জনকে আসামি করা হয়।
নাশকতা মামলার বাদী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সিধুলী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান রতন জানান, ইউএনও মহোদয় চেয়ারম্যানকে আগে থেকেই চেনেন, তিনি তার গাড়িতে তুলে বিভিন্ন মণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন। মামলার আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।
সিধুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুব আলম মিরন বলেন, ‘পূজামণ্ডপে গিয়েছিলাম। এর আগে আমার বিরুদ্ধে একটা মামলা হয়েছে বলে আমি শুনেছি। আমার কোনো সমস্যা হয় না, তাই চলাচল করি।’
মাদারগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর আলম বলেন, ‘ইউএনওর সঙ্গে উপজেলার বিসিএস ক্যাডার ও নন ক্যাডার সবাই মিলে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে যাই। উনি চেয়ারম্যান। আর নাশকতা মামলার আসামি তা আমার জানা নেই। আমি থানায় নতুন যোগদান করেছি। আমি তাকে চিনি না।’
মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাইযুল ওয়াসীমা নাহাত বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করার জন্য গিয়েছি, জনপ্রতিনিধি হিসেবে চেয়ারম্যান সেখানে গিয়েছেন। আমি জানতাম না যে তিনি মামলার আসামি। সাংবাদিকদের মাধ্যমে শুনেছি, তাই ফেসবুক থেকে ছবিগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে।’
জামালপুরের জেলা প্রশাসক হাসিনা বেগম বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
Editor and Publisher : Nityananda Sarkar,
News Editor- Arun Sarkar.