মো: আব্দুল্লাহ, জৈন্তাপুর (সিলেট) প্রতিনিধি //
পাথরের উপর দিয়ে বয়ে চলা পিয়াইন নদীর প্রবাহমান স্বচ্ছ পানির ধারা, ঝুলন্ত ডাউকি ব্রিজ, নীল দিগন্ত আর সবুজ গালিচার উঁচু উঁচু পাহাড়ে সাদা-কালো মেঘের খেলা, সবমিলিয়ে ভারতের মেঘালয় সীমান্ত ঘেঁষা প্রকৃতির দান রুপ-সজ্জায় যেনও এক অপূর্ব মিথস্ক্রিয়া সিলেটের প্রকৃতির কন্যা জাফলং। সারাজীবন মনে রাখার মতো ভ্রমণের স্মৃতি জমিয়ে রাখতে জাফলং জিরোপয়েন্ট, মায়াবী ঝর্ণা, শ্রীপুর পিকনিক সেন্টারে আনন্দ ভ্রমণ করেছে বালিপাড়া যুবসমাজের প্রায় চারশও এর অধিক যুবক।
সিলেটের জৈন্তাপুরের ৫নং- ফতেহপুর ইউনিয়নের (হরিপুর) ৭নং ওয়ার্ড পশ্চিম বালিপাড়া যুবসমাজের উদ্যোগে গত (১৯ অক্টোবর) শনিবার সকাল সাড়ে আটটায় এতিহ্যবাহি বালিপাড়া ফুটবল মাঠে বালিপাড়া গ্রামের সকল ভ্রমণ পিপাষু যুবক একসাথে জড়ো হোন। এসময় ভ্রমণ কারীদের উদ্দেশ্যে শুভ কামনা জানিয়ে দিকনির্দেশনা মূলক বক্তব্য রাখেন, বালিপাড়া যুবসমাজের আনন্দ ভ্রমণ পরিচালনা কমিটির উপদেষ্টা বিশিষ্ট সমাজসেবী মো: আনোয়ার হোসেন, মো: জালাল উদ্দীন, ইন্জিনিয়ার নাসির উদ্দীন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো: জালাল উদ্দীন, সামছুল ইসলাম, জুবের আহমেদ, বেলুন মিয়া, সাইফুল আলম, হাজী জয়নাল আবেদীন, হেলাল আহমেদ, জালাল উদ্দীন, হোসেন আহমেদ, আনোয়ার মিয়া, সয়দুল ইসলাম, ময়না মিয়া, নিজাম উদ্দিন, জমির উদ্দিন, আব্দুর রহমান, মনজুর আহমেদ, মাহতাব উদ্দিন, হাফিজ উল্লাহ, হান্নান মিয়া, মজনু মিয়া প্রমুখ।
পরিচালনা কমিটির দায়িত্বে ছিলেন, আব্দুর রহমান, আব্দুর রব, জামিল আহমেদ, নাজিম উদ্দীন, সুমন আহমেদ। পরে প্রকৃতি কণ্যা জাফলং এর উদ্দেশ্যে সকাল সাড়ে ০৯ টায় দশটি গাড়িতে করে ১৪ সদস্য বিশিষ্ট দায়িত্বশীল কমিটি নিয়ে যাত্রা শুরু করেন।
দায়িত্বশীলরা হলেন, শরীফ উদ্দিন, মো: ইন্তাজ আহমেদ, মাসুক আহমেদ, শাহ্ মোহাম্মদ কিবরিয়া,মো: জাকারিয়া, আরিফ উদ্দিন, আল-আমিন, জাবের আহমেদ,কবির আহমেদ, কাদির উদ্দিন, মিছবাহ উদ্দিন, হিলাল উদ্দিন, আলী আহমেদ, সাংবাদিক মো: আব্দুল্লাহ।
সকাল সাড়ে ১০ টায় জাফলং পর্যটন কেন্দ্রে গিয়ে পৌঁছালে ভ্রমণকারী সকলই সারিবদ্ধভাবে জিরো পয়েন্ট যাত্রা শুরু করলে জাফলং পর্যটন কেন্দ্রে বেড়াতে আসা সকলের দৃষ্টিনন্দন হয়ে ওঠে চারশও প্লাস যুবসমাজের এই ভ্রমণ যাত্রা। ভারতের মেঘলায় সীমান্ত ডাউকি ব্রিজ, জিরো পয়েন্ট পর্যটণ স্পটে পৌঁছে দীর্ঘ সময় তাঁরা আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠেন। তাদের দীর্ঘ প্রত্যাশার আনন্দ ভ্রমণ উদযাপনের মাধ্যমে মিলনমেলায় মিলিত হয়ে ও ফটোসেশনে অংশ নেয় ভ্রমণ কারীরা।
পরে বিকেল ২টার দিকে শ্রীপুর পিকনিক সেন্টারে যাত্রা শুরু করে এসে পৌঁছালে ভ্রমণ পরিচালনা কমিটির দায়িত্বশীলরা দুপুরের খাবার পরিবেশন করেন। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শ্রীপুর পিকনিক সেন্টারে ভ্রমণকারীদের ১টি প্রীতি মিনি ফুটবল ম্যাচ, রশি টান, ভ্রমণ পরিচালনা কমিটির উপদেষ্টাদের মধ্যে বেলুন ফুটানো প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে সাড়ে ৪টার দিকে ভ্রমণকারীদের একটি লটারি ও পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, ৫নং- ফতেহপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার ড. প্রদীপ কুমার দাস।
অবশেষে বিকেল সাড়ে ৬টার দিকে ভ্রমণকাজ সম্পন্ন করে সুশৃঙ্খলভাবে হরিপুর বালিপাড়া গ্রামের পথে যাত্রা করেন। এই আনন্দ ভ্রমণকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক, দেশ-বিদেশে প্রশংসায় ভাসছে বালিপাড়া যুবসমাজ। বিভিন্ন পোস্ট ও কমেন্ট করতে দেখা যায় অনেকেই লিখছেন একটি গ্রামের যুবসমাজ নিয়ে এত বড় ভ্রমণ সিলেট আর কোন উপজেলায় হতে দেখা যায়নি। আবার কেউ কেউ লিখছেন জৈন্তার ঐতিহ্যের সাথে আরেকটি ঐতিহ্য সৃষ্টি হলো।
এদিকে এই গ্রামের কৃতি সন্তান আমেরিকা প্রবাসী ডক্টর ইন্জিনিয়ার জুবায়ের রহমান তাঁর অভিনন্দন বার্তায় বালিপাড়া যুবসমাজের প্রশংসা করে লিখছেন একসাথে এতগুলো মানুষকে একত্রিত করে একটি ভ্রমণ করা সত্যিই প্রশংসনীয় কাজ। এতে করে সম্প্রীতি ও ঐক্যের বন্ধনে এগিয়ে গেলো বালিপাড়া যুবসমাজ।
এই ভ্রমণ সফল হওয়ায় ভ্রমণে সহযোগিতাকারী একই গ্রামের কৃতি সন্তান দেশ ও প্রবাসে অবস্থানরত সকলের প্রতি এবং আয়োজক কমিটিসহ বালিপাড়া গ্রামের সকল ভ্রমণ কারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান গ্রামবাসী।