ছবি-সংগৃহীত।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক //
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বাকি আর মাত্র এক সপ্তাহ। হাড্ডাহাডি লড়াইয়ে থাকা দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুজনই প্রচারণায় মহাব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
৫ নভেম্বরের নির্বাচনের প্রাক্কালে বিভিন্ন জনসভায় দুজনই একে অপরকে ঘায়েল করছেন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার কমলা হ্যারিস ওয়াশিংটনে এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘ব্যাটল গ্রাউন্ড’ খ্যাত গুরুত্বপূর্ণ পেনসিলভেনিয়ার প্রচারণায় অংশ নেন।
এদিকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে প্রায় সাড়ে চার কোটি ভোটার আগাম ভোট দিয়েছেন। খবর রয়টার্স, ডয়েচে ভেলে, এএফপি, আলজাজিরার।
নির্বাচনের ঠিক এক সপ্তাহ আগে সোমবার মিশিগানের এক নির্বাচনি সভায় ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ‘ভয় আর বিভাজনের দেওয়াল’ গুঁড়িয়ে দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। ২০২২ সালে এখানে সবচেয়ে বেশি তরুণদের ভোট পড়েছিল। সেটি বিবেচনায় রেখেই ডেমক্র্যাটরা তরুণদের উজ্জীবিত করার চেষ্টা করছেন। সেই সঙ্গে ট্রাম্প বিভিন্ন সময় যেসব বর্ণবাদী মন্তব্য করেছেন, সেগুলোকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন।
তিনি স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে ২০ হাজার মানুষের সমাবেশে বক্তব্য দেন বলে জানা গেছে।
আর সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার জর্জিয়ার আটলান্টায় এক সমাবেশে সাবেক ফাস্ট লেডি মিশেল ওবামাসহ সমালোচকদের তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন। সেখানে তিনি মিশেল ওবামাকে ‘ন্যাস্টি’ বলে উলেখ করার পাশাপাশি কমলা হ্যারিসকেও ‘ফ্যাসিস্ট’ বলে মন্তব্য করেন। মঙ্গলবার ট্রাম্পও হোইট হাউজের ঠিক কাছেই ইলিপসে এক নির্বাচনি সমাবেশে বক্তব্য দেন।
এবারের নির্বাচনে দুই প্রার্থীর মধ্যেই হাড্ডাহাডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। তাদের জয়-পরাজয় নির্ভর করতে পারে মূলত ৭টি অঙ্গরাজ্যের ওপর। এর মধ্যে রয়েছে পেনসিলভেনিয়া, উত্তর ক্যারোলাইনা, জর্জিয়া, মিশিগান, অ্যারিজোনা, উইসকনসিন ও নেভাদা। ভোটের এক সপ্তাহের কম সময় বাকি থাকলেও দুই প্রার্থী এসব অঙ্গরাজ্যে তাদের মধ্যকার ব্যবধান কমিয়ে আনতে পারেননি।
মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের নিজস্ব ভোট রয়েছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জটিল ইলেকটোরাল কলেজ ব্যবস্থার অধীন প্রতিটি অঙ্গরাজ্যে জনসংখ্যার ভিত্তিতে নির্দিষ্টসংখ্যক ইলেকটর (নির্বাচক) থাকেন।
৫০টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে ৪৮টির জন্য নিয়ম হলো-যিনি পপুলার ভোটে (সাধারণ নাগরিকদের ভোট) জিতবেন, তিনিই সে অঙ্গরাজ্যের সবকটি ইলেকটোরাল ভোট পাবেন; সেখানে পপুলার ভোটের ব্যবধান যত কমই হোক না কেন।
নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে জয়ী হওয়ার জন্য ৫৩৮টি ইলেকটোরাল ভোটের মধ্যে ২৭০টি ভোট পেতে হয়। আর এক্ষেত্রে দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলো (সুইং স্টেট) বড় ভূমিকা পালন করে।
ফাইভথার্টিএইট-এর দৈনিক পোল ট্র্যাকারের তথ্যানুসারে, কমলা হ্যারিস মিশিগানে সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। আর ট্রাম্প পেনসিলভানিয়া ও নেভাদায় কমলার চেয়ে সামান্য এগিয়ে রয়েছেন আর উত্তর ক্যারোলিনা, অ্যারিজোনা ও জর্জিয়ায়ও তিনি উলেখযোগ্য ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। উইসকনসিনে দুইজনই প্রায় সমান অবস্থানে রয়েছেন। সাতটি অঙ্গরাজ্যেই দুই প্রার্থী একে অপরের দুই পয়েন্টের মধ্যে রয়েছেন। তাই শেষ মুহূর্তে ফলাফল কী হবে, সেটা সময়ই বলে দেবে।
সোমবার প্রকাশিত এক তথ্যে দেখা গেছে, আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের আগে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৫ মিলিয়ন বা সাড়ে চার কোটি আমেরিকান আগাম ভোট দিয়েছেন বলে একটি পর্যবেক্ষক সংস্থা জানিয়েছে। ইউনিভার্সিটি অব ফ্লোরিডার ইলেকশন ল্যাব প্রায় ৪ কোটি ৪০ লাখ ৮৭ হাজার ব্যালট গণনা করেছে।
ডাকের মাধ্যমে বা ব্যক্তিগতভাবে সশরীরে উপস্থিত হয়ে ভোটাররা এ আগাম ভোট দিয়েছেন। যারা আগেভাগে ভোটকেন্দ্রে গেছেন এবং যারা তাদের ব্যালটে মেইল করেছেন, তাদের সংখ্যা প্রায় সমান।
৫ নভেম্বর মঙ্গলবার অর্থাৎ সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়ে কর্মদিবস হওয়ায় অনেক ভোটার কেন্দ্রে যেতে পারবেন না। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় প্রতিটি অঙ্গরাজ্যে ভোটারদের আগাম ভোট দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
Editor and Publisher : Nityananda Sarkar,
News Editor- Arun Sarkar.