ফাইল ছবি।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক //
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়ভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রাক-বিচার চেম্বার-১ জানিয়েছে যে, নেতানিয়াহু এবং গ্যালান্টকে ‘যুদ্ধের একটি পদ্ধতি হিসেবে ক্ষুধার্ত রাখার অপরাধ’ এবং ‘হত্যা, নিপীড়ন এবং অন্যান্য অমানবিক কাজের জন্য মানবতাবিরোধী অপরাধে’ অভিযুক্ত করা হয়েছে।
রোম স্ট্যাটিউট অনুযায়ী, আইসিসির সদস্য রাষ্ট্রগুলো এই দুই নেতাকে গ্রেফতার করে আদালতের কাছে হস্তান্তর করতে বাধ্য। তবে অভিযুক্তের অনুপস্থিতিতে (in absentia) আইসিসি কোনো বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে না এবং এর নিজস্ব প্রয়োগ ক্ষমতাও নেই।
নেতানিয়াহু ও গ্যালান্টের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের বিস্তারিত নিম্নে তুলে ধরা হলো-
যুদ্ধাপরাধ: ক্ষুধার্ত রাখার পদ্ধতি
আইসিসি জানিয়েছে, নেতানিয়াহু এবং গ্যালান্ট ইচ্ছাকৃতভাবে গাজার জনগণকে খাদ্য, পানি, ওষুধ, জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ থেকে বঞ্চিত করেছেন। তারা মানবিক সহায়তা ব্যাহত করেছেন এবং সংস্থাগুলোর সহায়তা পৌঁছানোর প্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করেছেন।
আইসিসি আরও জানিয়েছে, এই সহায়তা বন্ধ করার সিদ্ধান্তগুলো প্রায়শই আন্তর্জাতিক চাপ বা যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে শিথিল করা হতো। কিন্তু এসব সিদ্ধান্ত কখনোই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মেনে নেওয়া হয়নি।
আইসিসি উল্লেখ করেছে, ‘দীর্ঘমেয়াদী এই বঞ্চনা এবং নেতানিয়াহুর বিবৃতি, যা যুদ্ধের উদ্দেশ্যের সঙ্গে মানবিক সহায়তার সংযোগ ঘটিয়েছে, তা যুদ্ধাপরাধের দায়িত্ব নির্দেশ করে’।
মানবতাবিরোধী অপরাধ: হত্যা
অবরুদ্ধ গাজায় খাদ্য, পানি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের অভাবের ফলে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে শিশুদের অপুষ্টি ও পানিশূন্যতার কারণে মৃত্যুও অন্তর্ভুক্ত।
আইসিসি বলেছে, ‘এই অবস্থা ও পরিস্থিতগুলো পরিকল্পিতভাবে একটি জনগোষ্ঠীকে ধ্বংস করার জন্য তৈরি করা হয়েছে’।
মানবতাবিরোধী অপরাধ: নিপীড়ন ও অমানবিক কাজ
গাজায় মেডিকেল সরঞ্জামের অভাব, যেমন অ্যানাস্থেশিয়া এবং অস্ত্রোপচারের মেশিন সীমিত করার জন্য নেতানিয়াহু এবং গ্যালান্ট দায়ি। এর ফলে অ্যানাস্থেশিয়া ছাড়াই রোগীদের অপারেশন করতে ডাক্তারদের বাধ্য করা হয়েছে।
আইসিসির মতে, এটি চরম ‘অমানবিক কাজ এবং নিপীড়নমূলক অপরাধ’।
নাগরিকদের ওপর হামলার নির্দেশ-
আইসিসি জানিয়েছে, নেতানিয়াহু এবং গ্যালান্ট ইচ্ছাকৃতভাবে গাজার বেসামরিক জনগণের ওপর হামলার নির্দেশ দিয়েছেন। তারা এ ধরনের অপরাধ প্রতিরোধ বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের কোনো উদ্যোগ নেননি।
আইসিসির অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু এবং গ্যালান্ট তাদের ক্ষমতার চরম অপব্যবহার করেছেন এবং গাজার জনগণের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচার শুরুর জন্য কার্যক্রম চলছে। সূত্র: মিডল ইস্ট আই