• ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

কুশিয়ারা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, সরকার হারাচ্ছে কোটি টাকা রাজস্ব!

admin
প্রকাশিত ০৪ ডিসেম্বর, বুধবার, ২০২৪ ১৪:২৭:৩৩
কুশিয়ারা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, সরকার হারাচ্ছে কোটি টাকা রাজস্ব!

জুয়েল চৌধুরী, জেলা প্রতিনিধি হবিগঞ্জ //


হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার ৫নং দৌলতপুর ইউনিয়নের হিলাল নগর ও তেলঘরি গ্রামের মধ্যবর্তী এলাকা থেকে চলছে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন। দিন রাত অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু তোলার কারণে হুমকির মুখে রয়েছে নদী পারের শত শত ক্ষেত ও ফসলি জমি। অবাধে বালু তোলার কারণে ভেঙে যাচ্ছে এলাকার রাস্তা-ঘাট, বিলীন হচ্ছে বাড়ী-ঘর।

জানা গেছে- হিলাল নগর ও তেলঘরি গ্রামের মধ্যবর্তী এলাকায় দীর্ঘদিন যাবত ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র। আর এ চক্রের নেতৃত্বে রয়েছে ৫নং দৌলতপুর উমর ফারুকসহ তার লোকজন। আর তার সাথে সঙ্গ দিচ্ছে জনৈক ব্যক্তি মনজু কুমার দাস। এছাড়াও তাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করছে স্থানীয় ইউপি সদস্য মনির মিয়া, দবির মিয়া, হেদায়ত উল্লাহ, রমজান আলী ছাড়াও মাছু মিয়া, মইন উদ্দিন, সোহাগ চৌধুরী, শেখ নাছিম ও নুরুল হুদাসহ এলাকার আরো কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি।

খোঁজ নিযে জানা গেছে, চক্রটি এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছে। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পায় না। তারা দীর্ঘদিন যাবত অবৈধভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে আসলেও কথা বলার সাহস নেই কারো। আবার কোন কোন ব্যক্তি কথা বললেও তাদের উপর নেমে আসে নির্যাতন। দিনের পর দিন অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে চক্রটি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেলেও সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমান রাজস্ব। এমতাবস্থায় এলাকাবাসির স্বার্থে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- হিলাল নগর ও তেলঘরি গ্রামের মধ্যবর্তী এলাকায় বড় একটি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে সেখান থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। আর এতে কাজ করছে ১৫ থেকে ২০ জন শ্রমিক। বালু উত্তোলন শেষে তারা সেগুলোকে বড় নৌকায় করে মার্কুলি বাজারের পার্শ্ববর্তী একটি স্থানে নিয়ে স্তুপ করে রাখা হচ্ছে। স্থানীয়রা বলছেন- প্রতিদিন অন্তত ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার বালু ও মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে কুশিয়ারা নদী থেকে। যে কারণে নদীর তলদেশে সৃষ্টি হচ্ছে বিশাল বিশাল গর্তের।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন- অবৈধভাবে দীর্ঘদিন যাবত ওই এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করা হলেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বালু তোলার কারণে হুমকিতে রয়েছে নদী পাড়ের ফসলি জমি। অনেক স্থানে আবার ঘর বাড়িতে ধ্বসও দেখা দিয়েছে। তাই এখনই এসব বন্ধ করা জরুরি।
গ্রামবাসী আরও বলেন- চক্রটি খুবই প্রভাবশালী। তাদের বিরুদ্ধে কথা বললেই তারা নানা ভাবে হয়রাণি করে সাধারণ লোকজনদের। তাদের বালু তোলার কোন ধরণের অনুমতি নেই। অথচ তারা দীর্ঘদিন যাবত পরিবেশ বিনষ্ট করে বালু উত্তোলন করে আসছে।

হবিগঞ্জ জেলা বাপা’র সাধারণ তোফাজ্জুল সোহেল দ্য ডেইলিমর্নিংসান’কে বলেন- নদীর তলদেশ থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন আমাদের পরিবেশের জন্য মরাত্মক হুমকি। এখন এর প্রভাব তেমন একটা না পড়লেও পরবর্তীতে বিস্তুর প্রভাব ফেলবে বালু তোলার ঘটনা। তাই পরিবেশ প্রতিবেশ রক্ষায় সংশ্লিষ্টদের এসব বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।

এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)।