ফাইল ছবি।
বিশেষ প্রতিবেদক //
আবারও শ্রমিক বিক্ষোভে অশান্ত আশুলিয়া শিল্প এলাকা। সরকার ঘোষিত বার্ষিক ৯ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট প্রত্যাহারসহ নতুন আরও কিছু দাবি-দাওয়া নিয়ে বুধবারও কর্মবিরতি পালন করেছেন আশুলিয়ার বেশ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা।
বুধবার সকালে কাজে যোগ দিয়েও ২৫টি কারখানার শ্রমিকরা উৎপাদন বন্ধ রেখে বেরিয়ে যান। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে বেশ কয়েকটি কারখানায়।
শিল্প–পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নাসা গ্রুপের তিনটি কারখানা ১৩(১) ধারা অনুসারে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া ২৫-৩০টি কারখানার শ্রমিকেরা কাজে যোগ না দেওয়ায় দুপুরের আগে বিভিন্ন সময়ে ছুটি ঘোষণা করা হয়। পরে শ্রমিকেরা কারখানা থেকে বের হয়ে যান। তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর তথ্য অনুসারে, আজ বুধবার আশুলিয়ায় ইনক্রিমেন্ট ১৫ থেকে ২০ শতাংশের দাবিতে কাজ বন্ধ বা শ্রমিকেরা কাজ না করে চলে গেছেন এমন কারখানার সংখ্যা ২৫।
তবে হঠাৎ পোশাক খাতে এ ধরনের অস্থিরতার পেছনে ইন্ধন দেখছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও মালিকপক্ষ। কারা এ ধরনের ঘটনায় ইন্ধন দিচ্ছে তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। এ ছাড়া শ্রমিক অসন্তোষের পেছনে তৃতীয় পক্ষের কোনো কারসাজি রয়েছে কিনা তাও তদন্ত হচ্ছে।
আশুলিয়ায় বুধবার কয়েকটি কারখানায় ইটপাটকেল ছোড়া হয়। বড় ধরনের সংঘাতময় অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে যৌথ বাহিনীর সদস্যরাও সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। সড়কের বিভিন্ন পয়েন্ট ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি।
গত তিন মাসে কয়েক বার আশুলিয়া, সাভার ও গাজীপুরে নানা দাবিতে রাস্তায় নামেন শ্রমিকরা। তবে আশুলিয়া ছিল সবচেয়ে বেশি অশান্ত। অনেক কারখানায় দফায় দফায় ভাঙচুর ও হামলা করা হয়েছে। সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় ধীরে ধীরে পরিস্থিতি শান্ত হলেও হঠাৎ ফের আশুলিয়ায় শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনায় মালিকপক্ষ উদ্বিগ্ন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইনক্রিমেন্ট নিয়ে আগামীকাল আবার ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হবে।
এদিকে শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, শিল্প খাতে এক ধরনের অস্থিরতা চলছে। বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতে এ অস্থিরতা সৃষ্টি করা হয়েছে। পতিত সরকার ও তাদের বন্ধুরাষ্ট্র জড়িত হয়ে কিছু সমস্যা তৈরি করছে। কিছু সমস্যা শ্রমিকরা না বুঝে করছেন। বুধবার আগারগাঁওয়ে এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
আশুলিয়ায় শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম ভূইয়া গণমাধ্যমকে বলেন, বার্ষিক বেতন-ভাতা ১৫ শতাংশ বাড়ানো ছাড়াও ছুটির টাকাসহ কয়েকটি দাবিতে সকাল থেকে কর্মবিরতি পালন শুরু করেন শ্রমিকরা। একপর্যায়ে কিছু শ্রমিক কয়েকটি পোশাক কারখানা লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে অন্য শ্রমিকদের বের করে আনার চেষ্টা করেন। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ পর্যায়ক্রমে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে।
মতামত জানান।
Editor and Publisher : Nityananda Sarkar,
News Editor- Arun Sarkar.