আন্তর্জাতিক ডেস্ক //
ভারতের লোকসভায় সরব হলেন কংগ্রেসের প্রথমবারের সংসদ সদস্য প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। সোমবার বিজয় দিবস উপলক্ষে কথা বলতে গিয়ে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং ভারত সরকারের তরফ থেকে কাঙ্ক্ষিত ভূমকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নিপীড়ন চলছে। লাগাতার আক্রান্ত হচ্ছেন হিন্দু, খ্রিস্টান-সহ বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষ।
এরপরই প্রিয়াঙ্কা দাবি তোলেন, এবার সময়ে এসেছে- ভারত সরকারের ফের একবার বাংলাদেশ ইস্যুতে পদক্ষেপ নেওয়ার।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নিপীড়ন থামাতে মূলত দুটি দাবি উত্থাপন করেন প্রিয়াঙ্কা। তার বক্তব্য, প্রথমত- ভারত সরকারকে অবিলম্বে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে হবে। দ্বিতীয়ত- ভারত সরকারকে বাংলাদেশের বর্তমান প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে অনাচার ও অত্যাচার বন্ধ করতে পদক্ষেপ নিতে হবে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে এখন পর্যন্ত অন্তত মোদি সরকারকে খুব বড় কোনো ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি। যদিও ইতোমধ্যেই ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। সংখ্যালঘু নিপীড়নের সমালোচনা করেছেন।
বাংলাদেশের তরফ থেকেও তাকে আশ্বস্ত করা হয়েছে এবং ভারতের মিডিয়ায় বিষয়টি নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলেও প্রতিবাদ করা হয়েছে। তারপরও চিত্রটা বিশেষ বদলায়নি।
এদিকে এদিন (১৬ ডিসেম্বর) বিজয় দিবস উপলক্ষে ভাষণ দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাৎপর্যপূর্ণভাবে বিজয় দিবসকে ‘ভারতের জয়’ বলে উল্লেখ করেছেন, তবে বাংলাদেশের নাম উচ্চারণ করেননি তিনি।
অন্যদিকে, বাংলাদেশে ‘মহান বিজয় দিবস’ পালন অনুষ্ঠানে বর্তমান সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস যোগ দিলেও সেখানে ভারতের নাম উল্লেখ করেননি তিনি।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অবসান ঘটে। বাংলাদেশ-পাকিস্তান যুদ্ধে ভারতীয় সেনাদের কাছে রীতিমতো পর্যুদস্ত হওয়ার পর এই দিনটিতেই আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের কাছে নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয় পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। যার ফল- স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয়।
এদিন লোকসভায় দাঁড়িয়ে সেই ঐতিহাসিক মুহূর্ত স্মরণ করেন ওয়েনাডের সংসদ সদস্য প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। যে বীর সেনাদের অনমনীয় সংগ্রাম সেইদিন বিজয় এনে দিয়েছিল, তাদের তিনি শ্রদ্ধা জানান।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে এ প্রসঙ্গে ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকেও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন তারই নাতনি প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। তিনি মনে করিয়ে দেন, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ওপর যখন পশ্চিম পাকিস্তানের সেনা নিদারুণ অত্যাচার চালাচ্ছে, তখন বাকি বিশ্ব শুধু দর্শকের ভূমিকা পালন করলেও (প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন) তৎকালীন ভারত সরকার ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বাংলাদেশকে রক্ষা করতে।
এ প্রেক্ষাপটে লোকসভায় দাঁড়িয়ে প্রিয়াঙ্কা বলেন, ১৯৭১ সালে ভারতীয় সেনার কাছে পাক বাহিনীর নতি স্বীকারের সাক্ষ্য- সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তের বিখ্যাত ছবিটি পর্যন্ত তার স্থান থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে! যা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
মতামত জানান।
Editor and Publisher : Nityananda Sarkar,
News Editor- Arun Sarkar.