• ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জাস্টিস ও ন্যায়বিচার চাই: আলাল

admin
প্রকাশিত ২১ ডিসেম্বর, শনিবার, ২০২৪ ১৬:২৫:১১
আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জাস্টিস ও ন্যায়বিচার চাই: আলাল

ঢাকা //


অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্য বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, আমাদের নামে যে অজস্র মিথ্যা মামলা এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার মামলা রয়েছে, সেই মামলাগুলোকে তুলে নেওয়ার জন্য আপনারা এখন দাবাড়ুদের মতো দাবার গুটি সাজিয়েছেন। এটা হলে ঐটা হবে, আর ঐটা হলে এটা হবে। এটা তো ন্যায়বিচার নয়। ন্যায়বিচার হলো জাস্টিস। আমরা এ সরকারের কাছে জাস্টিস চাই, ন্যায়বিচার চাই।

শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত সাবেক মন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু, লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক ছাত্রনেতা জাকির খানসহ সকল রাজবন্দির নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এক বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানসহ অসংখ্য নেতাকর্মীর নামে যে অজস্র মামলা রয়েছে, সে মামলাগুলো এখনো কেন তুলে নেওয়া হচ্ছে না। যে মামলাগুলোতে আমাদেরকে সাজা দেওয়া হয়েছে, সে মামলাগুলোর তথ্য প্রমাণ কোনো কিছুই পাওয়া যায়নি। যার সবচেয়ে বড় প্রমাণ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান নিজেই। বেগম খালেদা জিয়া দুই কোটি টাকা এক অ্যাকাউন্ট থেকে আরেক অ্যাকাউন্টে নিয়েছেন, এই অপরাধের কারণে যে জজ বেগম জিয়াকে ১২ বছরের সাজা দিয়েছে, সেই জজকে এক সপ্তাহের মধ্যে প্রমোশন দিয়ে বিচারপতি বানানো হয়েছে।

আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, গোটা বিচার বিভাগকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে বিচারপতি খায়রুল হক এবং ওবায়দুল হাসান এদেরকে ব্যবহার করে মানুষের ন্যায্য অধিকার, ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এটা এই সরকারের (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) প্রধানরাও স্বীকার করছেন।

শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, আপনি পৃথিবীর কোথাও জায়গা পাবেন না, কোনো রাজনৈতিক দল টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় থেকে একটা গণঅভ্যুত্থানের কারণে সমস্ত সহযোগীরা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। বেগম খালেদা জিয়াকে বাড়িছাড়া করেছিলেন, বাংলাদেশের মানুষ আপনাকে দেশছাড়া করেছে।

বিএনপি চেয়াপারসনের এই উপদেষ্টা বলেন, গতকালকে একজন উপদেষ্টা মারা গেছেন। তিনি আইনের দিক থেকে একজন বিজ্ঞ মানুষ ছিলেন। জীবিত থাকা অবস্থায় তিনি আইনের ব্যাখ্যায় অনেক কথা বলেছেন। কিন্তু, বাস্তবে তার প্রয়োগ আমরা এখনো দেখিনি। আইন উপদেষ্টা হিসেবে আসিফ নজরুল আছে। আইনের একজন শিক্ষক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি সম্মানিত জায়গায় তিনি আছেন। তার পক্ষ থেকে বাংলাদেশের মানুষ ন্যায় বিচারের দৃষ্টান্ত আশা করে। ন্যায় বিচারের দৃষ্টান্ত দেখাতে হলে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের মামলাগুলো যেভাবে একেএকে আইনের দৃষ্টিতে বাতিল হয়ে যাচ্ছে , একইসাথে আব্দুস সালাম পিন্টু, লুৎফর জামান বাবর এবং জাকির খানের মামলাগুলো বাতিল হওয়া উচিত। আপনার (আসিফ নজরুল) নিকট সুনির্দিষ্টভাবে আমরা এটা দাবি করছি। আপনি আসিফ নজরুল নিজেকে যত বড় কিংবা মনে করেননা কেন, কিন্তু আপনার কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি।

মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, বাংলাদেশে যারা জনগণের রোষানলে পড়ে দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন, সেই পালিয়ে যাওয়া বাহিনীর কাছে যদি আমরা আর্তনাদ করে বলি, ফিরিয়ে দাও আমাদের ১৬ টি বছর, এতে কোনো লাভ হবে না। কারণ তাদের এখন দেওয়ার কিছু নেই। তারা (আ.লীগ) বরং বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে নিতে চায়। কিন্তু, যাদের দেওয়ার আছে, যারা সব শ্রেণির মানুষের সমর্থন নিয়ে আজকে দেশ পরিচালনা করছেন, তারা একটা জায়গায় গিয়ে সবচেয়ে বড় হোঁচট খেয়েছেন। সেটা হচ্ছে দ্রব্য মূল্যের দাম কমাতে না পারা। সাধারণ মানুষ এখন প্রশ্ন করে বলে, আগে সংসার নাকি সংস্কার। কারণ মানুষের এখন সংসারই তো চলছে না। প্রতিটি জিনিসের মূল্য লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছে। সংসার চালানো যেখানে দায়, সেখানে সংস্কার নিয়ে জনগণের কোনো মাথাব্যথা নেই।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পরিষদের আহবায়ক মোহাম্মদ কামাল আহমেদের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক মীর আমির হোসেন আমু, বাংলাদেশ চালক দলের সভাপতি জসিম উদ্দিন কবির, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক পারভেজ মল্লিক, এল কে রনি, দেলোয়ার হোসেন খোকনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।

আপনাদের মূল্যবান মতামত ব্যক্ত করুন।