প্রতীকী ছবি।
গোয়াইনঘাট (সিলেট) প্রতিনিধি //
সিলেটের গোয়াইনঘাটে গরু চুরির অভিযোগ এনে চুনা ও বালু মিশ্রিত পানি পান করিয়ে এক যুবককে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার মধ্যজাফলং ইউনিয়নের জাফলং চা বাগানে।
নিহত ব্যক্তি হলেন- ডৌবাড়ী ইউনিয়নের দাতারি গ্রামের হেলাল মিয়া (৩২)।
জানা গেছে- মঙ্গলবার বিকেলে মধ্যজাফলং চা বাগানে গরু চুরির অভিযোগে ইসলামপুর গাংপার গ্রামের মনির মিয়ার ছেলে মোশাররফ হোসেন, আমির উদ্দিন, আব্দুল খালিকের ছেলে সালাম ও তাদের সহযোগিরা গরু চুরির অভিযোগ এনে হেলালকে ধরে নিয়ে যায়। পরে তাকে একটি গাছের সঙ্গে বেধে বেধড়ক মারপিট করে এবং চুনা ও বালুমিশ্রিত প্রায় এক লিটার পানি পান করিয়ে দেয়। একপর্যায় হেলান অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে মধ্যজাফলং ইউনিয়ন অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতভর সেখানে রেখে হেলালকে নির্যাতন করা হয়।
খবর পেয়ে আজ বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) ভোরে হেলালের স্বজনরা মধ্যজাফলং ইউনিয়ন অফিস থেকে অজ্ঞান অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে তিনি মারা যান। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে হেলায় রাস্তায় খুব বেশি বমি করেন এবং তার শরীরি থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয় বলে জানান তার পরিবারের সদস্যরা।
এদিকে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নিহতের পরিবারের লোকজন। তাদের অভিযোগ- পুলিশের অবহেলার কারণেই হেলালের মৃত্যু হয়েছে।
এব্যাপারে গোয়াইনঘাট থানাপুলিশের এস. আই প্রভাকর বড়ুয়া জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় খবর পেয়ে তিনি হেলালকে উদ্ধার করতে যান। তবে স্থানীয়রা তাকে বলেন- হেলাল উদ্দিনকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। তারপর তিনি ঘটনাস্থলে হেলালকে রেখে চলে যান।
পরিবারের লোকজন বলছেন- পুলিশ সময়মতো হেলালকে উদ্ধার করে ফেললে হয়তো তিনি বেচেঁ যেতেন। এতে পুলিশের যতেষ্ট গাফলতি রয়েছে। এদিকে অভিযুক্ত মোশাররফ বলেন- আমি মারধর করিনি। এলাকার মানুষ মারধর করেছে, আমি শুধু ঘটনাস্থলে ছিলাম।
এবিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করে গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ সরকার তোফায়েল আহমেদ বলেন- অতিরিক্ত মারধর এবং চুনা-বালুমিশ্রিত পানি খাওয়ানোর কারণে হেলালের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে। নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আপনাদের মুল্যবান মতামত প্রকাশ করুন।
Editor and Publisher : Nityananda Sarkar,
News Editor- Arun Sarkar.