ঢাকা //
সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের অনুমোদিত খসড়ায় পরিবর্তন এনেছে সরকার। নতুন খসড়ায় বিতর্কিত সাইবার বুলিংয়ের বিধান বাদ পড়েছে। তবে যুক্ত হয়েছে জাতীয় পতাকা বা জাতীয় সংগীতের বিরুদ্ধে প্রচারণার শাস্তির বিধান। এ ছাড়া বেআইনি প্রবেশ বা হ্যাকিংয়ের ক্ষেত্রে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারের বিধান করা হয়েছে।
গত ২৪ ডিসেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৪-এর খসড়া অনুমোদন হয়। সরকার বলেছিল, এ অধ্যাদেশ দ্বারা সাইবার স্পেস এবং একই সঙ্গে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সুরক্ষিত হবে।
কিন্তু অনুমোদিত খসড়াটি নিয়েও ব্যাপক সমালোচনা হয়। সেখানে ধারা ২৫–এ সাইবার বুলিংয়ের নামে একটি বিধান ছিল। অর্থাৎ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বার্তা আদান-প্রদান প্ল্যাটফর্ম, ওয়েবসাইট বা সাইবার স্পেসে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে ভয়ভীতি প্রদর্শন, হুমকি প্রদান বা হয়রানি করা, মিথ্যা বা ক্ষতিকর তথ্য, অপমানজনক বার্তা, গালিগালাজ, গুজব বা মানহানিকর কনটেন্ট ছড়ানোর মাধ্যমে কোনো ব্যক্তির সুনাম বা মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত করা হলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ ছিল।
নাগরিক সমাজের বিভিন্ন পক্ষ থেকে এই বিধানের বিরোধিতা করে বলা হয়, এতে বাক্স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। এবার ‘সাইবার বুলিং’ বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে যৌন হয়রানির প্রসঙ্গ যুক্ত করা হয়েছে।
আগের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সাইবার নিরাপত্তা আইনে জাতীয় পতাকা ও সংগীতের অবমাননার শাস্তির বিধান ছিল। কিন্তু অনুমোদিত খসড়ায় তা বাদ পড়ে। যদিও নতুন খসড়ায় তা যুক্ত করে বলা হয়েছে, ডিজিটাল, ইলেকট্রনিক মাধ্যমে জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীতের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক কোনো প্রোপাগান্ডা, প্রচারণা চালালে ৩ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৩০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।
আরও যেসব উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে, তার মধ্যে রয়েছে জাতীয় সাইবার সুরক্ষা কাউন্সিলে নাগরিক সমাজের উপযুক্ত প্রতিনিধি সদস্য হিসেবে যুক্ত হতে পারবেন।
প্রতারণার জন্য নিজের পরিচয় গোপন বা কারও জাতীয় পরিচয়পত্র বিকৃত করলে বা অন্যের তথ্য নিজের বলে প্রদর্শন করলে তবে তা সাইবার সন্ত্রাস হিসেবে বিবেচিত হবে। ধারা ২৭–এ ধর্মীয় বিদ্বেষের সঙ্গে জাতিগত বিদ্বেষ ও ঘৃণার প্রসঙ্গও যুক্ত হয়েছে।
এ ছাড়া অধ্যাদেশের খসড়ার ৮ ধারায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) আধেয় (কনটেন্ট) ব্লকের অনুরোধ করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এ ধারারও সমালোচনা রয়েছে। ধারাটি একই রেখে নতুন করে যুক্ত হয়েছে যে যেসব কনটেন্ট ব্লক হবে, সরকার তা জনস্বার্থে প্রকাশ করবে।
আপনাদের মতামত প্রকাশ করুন।
Editor and Publisher : Nityananda Sarkar,
News Editor- Arun Sarkar.