মৌলভীবাজার প্রতিনিধি //
ভুয়া উত্তরাধিকারী সেজে এবং জাল দলিল কৈরি করে ভূমি দখল ও হুমকির প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভোক্তভুগি যুক্তরাজ্য প্রবাসী সৈয়দ মদচ্ছির আহমদের স্ত্রী সৈয়দা আক্তার বেগম।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে সৈয়দা আক্তার লিখিত বক্তব্যে জানান, ভূমিদস্য সাজ্জাদুর রহমান জিতু কর্তৃক গীর্জা পাড়া নিবাসী মৃত সৈয়দ মদচ্ছির আহমদ-এর ভুয়া উত্তরাধিকারী সেজে জাল সনদ ও দলিল তৈরি করে ভূমি দখল এবং প্রাণনাশের হুমকি দেওয়াসহ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। এর আগে তিনি প্রেসক্লাবের সামনে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও সাজ্জাদুর রহমানের শাস্তির দাবি জানিয়ে প্রতিবাদ সভা করেন সৈয়দা আক্তার বেগম।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবৎ ইংল্যান্ড প্রবাসী। আমার স্বামীর নাম সৈয়দ মদচ্ছির আহমদ। তিনি দীর্ঘদিন ইংল্যান্ডে বসবাস করার পর বিগত ১৫/০৩/৯৯ ইং তারিখে মৃত্যুবরণ করেন।
মৃত্যুকালে তিনি ১ন্ত্রী আমি সৈয়দা আখতার বেগম, ১ পুত্র সৈয়দ আলী রাজা আহমদ, ২ কন্যা সৈয়দা সাজনী খান ও সৈয়দা রাজনী আহমদকে উত্তরাধিকারী বিদ্যমানে মারা যান। আমার স্বামী সৈয়দ মদচ্ছির আহমদ, আমি এবং। আমাদের ৩ পুত্র কন্যা সবাই দীর্ঘদিন যাবৎ আহমদ ইংল্যান্ড রয়েছেন। একমাত্র পুত্র সৈয়দ আলী রাজা আহমদও ইতোমধ্যে ইংল্যান্ডে বসবাসরত অবস্থায় এক স্ত্রী, নাবালিকা ২ কন্যা ও নাবালক ১ পুত্র সন্তান রেখে মৃত্যুবরণ করেন।
তিনি বলেন, তার স্বামী সৈয়দ মদচ্ছির আহমদ আর কোন বিয়ে করেননি। স্বামী মৃত সৈয়দ মদচ্ছির আহমদের আপন দুই ভ্রাতা হন- সৈয়দ মাহমুদ আলী ও সৈয়দ শফিকুর রহমান। সৈয়দ শফিকুর রহমান নিঃসন্তান অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। সৈয়দ মাহমুদ আলী ৫ পুত্র যথাক্রমে- ১) সৈয়দ আব্দুল মতিন, ২) সৈয়দ সাজ্জাদুর রহমান, ৩) সৈয়দ আলাউর রহমান সিতু, ৪) সৈয়দ আলী নেওয়াজ উরফে সৈয়দ আজিজুর রহমান এবং ৩ কন্যা- ১) সৈয়দা তাহেরা খানম, ২) সৈয়দা রাহেলা বেগম ও ৩) সৈয়দা শিউলী বেগমকে রাখিয়া মারা যান।
উল্লেখ্য যে, সৈয়দ মাহমুদ আলীর স্ত্রীর নাম সৈয়দা কচিবুন্নেছা এবং সৈয়দা মাহমুদ আলীর ৫ পুত্র ৩ কন্যার মা হন সৈয়দা কচিবুন্নেছা।
নালিশের ১ম তপশীলে বর্ণিত ভূমির খরিদা সূত্রে মালিক হন আমার স্বামী সৈয়দ মদচ্ছির আহমদ। সৈয়দ মদচ্ছির আহমদ ও তার একমাত্র পুত্র সৈয়দ আলী রাজা আহমদ মৃত্যুবরণ করায় সৈয়দ মদচ্ছির আহমদের সম্পত্তি আত্মসাৎ করার দুরভিসন্ধিতে তাহার আপন ২ ভাতিজা সৈয়দ মাহমুদ আলীর পুত্র ১/২ নং বিবাদীগণ আমার স্বামী মৃত সৈয়দ মদচ্ছির আহমদের পুত্র সেজে অন্যের যোগ-সাজশে মৌলভীবাজার পৌরসভা হইতে বিগত ১৯/০৩/২০১৮ ইং তারিখে ৮১২ নং স্মারকে একটি ভূঁয়া, জাল উত্তরাধিকারী সনদ তৈরী করে।
বিষয়টি জানার পর মৌলভীবাজার পৌরসভায় আপত্তি দিলে বিগত ২৮/০৫/২০১৯ ইং তারিখে মৌলভীবাজার পৌরসভা কর্তৃপক্ষ উত্তরাধিকার সনদপত্রটি বাতিল করেন। প্রকৃতপক্ষে ১নং বিবাদী সৈয়দ সাজ্জাদুর রহমানের পিতা- সৈয়দ মাহমুদ আলী এবং মাতা- সৈয়দা কচিবুন্নেছা। এতদসংক্রান্ত ১নং বিবাদীর জন্ম নিবন্ধন সনদ, বিবাহের কাবিননামা বিভিন্ন দলিল ও ইউনিয়নের উত্তরাধিকারী সনদসহ অনেক সাক্ষ্য প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও চাচার সম্পত্তি আত্মসাৎ এর দুরভিসন্ধিতে ১নং বিবাদী তাহার পিতা- সৈয়দ মাহমুদ আলীর পরিবর্তে জাল-জালিয়াতির আশ্রয়ে পিতার নাম- সৈয়দ মদচ্ছির আহমদ লিখাইয়া ৬৪৫৮১৩৭৬৫৭ নংজাতীয় পরিচয়পত্র সৃষ্টি করিয়া রাখিয়াছেন ।
তিনি বলেন, আমি যুক্তরাজ্যে থানার সুযোগে আমার স্বামী মৃত সৈয়দ মদচ্ছির আহমদের সম্পত্তি দখলের জন্য বিবাদীগণ জাল- জালিয়াতির আশ্রয়ে ভূঁয়া কাগজা তৈরি করে আমার সম্পত্তি দখলের পায়তারা করে যাচ্ছে। এবং এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। তিনি এ ব্যাপারে প্রশাসনের সর্বস্তরের সহযোগিতা কামনা করছেন।
মতামত জানান।
