আন্তর্জাতিক ডেস্ক //
ভারতের কাশ্মীরের পেহেলগামে মঙ্গলবারের ভয়াবহ হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছেন। ‘পর্যটকদের’ উপর এই হামলার দায় স্বীকার করেছে কাশ্মীরভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী দ্য রেজিসটেন্স ফোর্স (টিআরএফ)।
বুধবার হামলার দায় স্বীকার করে দেওয়া এক বিবৃতি বলেছে, ‘যাদের টার্গেট করা হয়েছে তারা সাধারণ কোনো পর্যটক নয়। ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তাদের যোগাযোগ ও সংশ্লিষ্টতা ছিল। তারা ছিল গোপন সংস্থার সদস্য। পর্যটকের ছদ্মবেশে অনুসন্ধান চালানোর জন্য এখানে এসেছিল।’
ভয়াবহ এ হামলার দায় শিকার করা গোষ্ঠীটি কাশ্মীরে নিজেদের কার্যক্রম আরও বাড়ানোর হুমকি দিয়েছে। এই হামলা ভারত সরকারের জন্য একটি সতর্কবার্তা বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে টিআরএফ।
গোষ্ঠীটি বলেছে, ‘এটি শুধুমাত্র নয়াদিল্লির জন্য একটি সতর্কবার্তা নয়। এটি তাদের জন্যও সতর্কবার্তা যারা নয়াদিল্লির প্রশ্নবিদ্ধ নীতিকে সমর্থন করে।’
তবে ভারত সরকার এখন পর্যন্ত টিআরএফের দাবি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
এদিকে পেহেলগেম হামলার পর বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন দেশটির মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির জরুরি বৈঠকে প্রচ্ছন্নভাবে পাকিস্তানকে দায়ী করে প্রতিবেশি দেশটির বিরুদ্ধে পাঁচটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সিদ্ধান্তগুলো হলো:
১. সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত ঘোষণা। ভারত বলছে, পাকিস্তান যতদিন সীমান্তে সন্ত্রাস বন্ধ না করবে এবং সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন ত্যাগ না করবে ততদিন এটি স্থগিত থাকবে। ১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর করাচিতে তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ও পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট ফিল্ড মার্শাল আইয়ূব খান সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন। বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় বহুল আলোচিত এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
২. অবিলম্বে আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হবে। যাদের বৈধ নথি রয়েছে তারা ১ মে এর আগে সীমান্ত অতিক্রম করতে পারবেন।
৩. সার্ক ভিসা এক্সেম্পশন স্কিম (এসভিইএস) এর আওতায় পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারতে ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হবে না। পাকিস্তানি নাগরিকদের অতীতে জারি করা যেকোনো এসভিইএস ভিসা বাতিল বলে গণ্য হবে। এসভিইএস ভিসায় বর্তমানে ভারতে থাকা পাকিস্তানি নাগরিকদেরও ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়তে বলা হয়েছে।
৪. নয়াদিল্লিতে পাকিস্তানি হাইকমিশনের সামরিক, নৌ ও বিমান উপদেষ্টাদের ‘পার্সোনা নন গ্রাটা’ ঘোষণা করা হয়েছে। ভারত ছাড়ার জন্য এক সপ্তাহ সময় পাবেন তারা। ইসলামাবাদের ভারতীয় হাইকমিশন থেকে প্রতিরক্ষা, নৌ ও বিমান উপদেষ্টাদের প্রত্যাহার করে নিচ্ছে ভারত। সংশ্লিষ্ট হাইকমিশনের এই পদগুলো বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। উভয় হাইকমিশন থেকে সার্ভিস অ্যাডভাইজারের পাঁচজন সাপোর্ট স্টাফকেও প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
৫. হাইকমিশনের সামগ্রিক লোকবল ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০ জনে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যা ১ মে এর মধ্যে কার্যকর হবে।
মতামত ব্যক্ত করুন।
Editor and Publisher : Nityananda Sarkar,
News Editor- Arun Sarkar.