শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি //
মৌলভীবাজোরের শ্রীমঙ্গলে বোরো ধানে মাজড়া পোকার আক্রমণে কৃষকের মাথায় হাত। কীটনাশক প্রয়োগ করেও ঠেকানো যাচ্ছেনা পোকার আক্রমণ। এক ধরণের সাদা লম্বা লেদা পোকার আক্রমণে জমিতে সবুজ ফসল সাদা হয়ে গেছে। এমন অবস্থায় কৃষকরা দিশেহারা। তারা নানান ধরণের কীটনাশক ব্যবহার করেও পাচ্ছেন না কোন প্রতিকার।
সরেজমিন উপজেলার আশীদ্রোন ইউনিয়নের খোশবাস, টিকরিয়া, জামসী,ভূনবীর, লইয়াকুলসহ বিভিন্ন গ্রামে মাঠ ঘুরে দেখা গেছে ধানে (লেদা) পোকার আক্রমণের দৃশ্য। পোকার আক্রমণে ক্ষতির মুখে পড়েছেন অধিকাংশ কৃষক। কৃষকদের সাথে আলাপ করলে তারা বলছেন, বিঘা প্রতি ৬ থেকে ৭মণ ধান কম মিলবে। এতে তারা ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে ১১ হাজার ৫৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেখানে ১১ হাজার ৮শ ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণ হয়েছে। সম্ভব্য উৎপাদন ধানে ৪৭হাজার ২শত ৮১ মেট্রিক টন।
উপজেলার আশীদ্রোন খোশবাশ এলাকার কৃষক আমিন মিয়া বলেন, এ বছর বোরো ধানের বীজ খুবই ভালো হয়েছে। ধানের চারা রোপনের পর যেভাবে ধান হয়েছিল দেখে অনেক খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু সাদা লেদা পোকার আক্রমণে সব শেষ হয়ে গেছে।
উপজেলার আশীদ্রোন খোশবাশ এলাকার কৃষক মো: শাকির আহম্মেদ বলেন, তিনি ২১০ একর জমিতে প্রায় ৫২ হাজার টাকা খরচ করে বোরো আবাদ করেছিলেন। জমিতে পোকা আক্রমণ করায় তিনি বিভিন্ন ধরণের কীটনাশক প্রয়োগ করে কোন প্রতিকার পাননি। ধান গাছগুলো শুকিয়ে সাদা (চিটা) হয়ে গেছে। এত তার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলার লইয়ারকুল গ্রামের কৃষক বাহার আলী বলেন, তিনি ৪ কেয়ার জমিতে বোরো আবাদ করেন। জমিতে শীষ পোকার আক্রমণ হলে বিভিন্ন কীটনাশক প্রয়োগ করেও প্রতিকার মেলেনি। তিনি পরিবারের খোরাকের কথা ছিন্তা করে দিশে হারা। একই অবস্থা দেখা গেছে শহরতলীর সিন্দুরখান রোডের কৃষি জমিতে। কৃষক আব্দুল্লাহ মিয়া জানান, পরিবারের খোরাক যোগাতে প্রায় প্রায় ২ কেয়ার জমিতে বোরো ধান চাষ করেছিলেন। প্রথম দিকে ধানের বাম্পার ফলন দেখে খুশি হয়েছিলেন। পরে পোকার আক্রমণে তার জমি সাদা হতে থাকে। এখন আধপাকা ধান কেটে ফেলছেন। জমি থেকে অর্ধেক ধানও মিলবেনা। তিনি পরিবারের খোরাক নিয়ে ছিন্তিত রয়েছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রাসারণ কর্মকর্তা উজ্জল সূত্রধর জানান, এ বছর বোরোর ফলন ভালো হয়েছে। আবহাওয়া জনিত কারণে মাজরা ও শীষ কাটা পোকায় ধান কেটে ফেলছে। যে জমির ধান পেকে গেছে তা দ্রুত কেটে ফেলে ঘরে তোলা এবং আধা পাকা ধানের জমিতে কীটনাশক ব্যবহার করে পোকা দমন করার পরার্মশ দিচ্ছেন। এছাড়া জমিতে পানি রাখার পরার্মশও দেয়া হচ্ছে। পানি থাকলে পোকার আক্রমণ ঠেকানো সম্ভব।
উপজেলা কৃষি অফিসার আলাউদ্দিন বলেন, চলতি বছরে উপজেলায় ১১ হাজার ৮শ ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এবছর ফলন ভালো হয়েছে। আমাদের মাঠকর্মীরা কৃষকদের সরেজমিন পরামর্শ দিয়েছেন। ইতোমধ্যে ধান কাটা শুরু হয়েছে। আবহাওয়া জনিত কারণে কিছু কিছু এলাকায় ধানে মাজড়া ও শীষ কাটা পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে।
মতামত ব্যক্ত করুন।
Editor and Publisher : Nityananda Sarkar,
News Editor- Arun Sarkar.