মৌলভীবাজার (কমলগঞ্জ) প্রতিনিধি //
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে সুদের টাকার লেনদেন সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে হত্যা করা হয় ৬০ বছরের বৃদ্ধ ময়ূন মিয়াকে। ময়ূন মিয়ার মরদেহ উদ্ধারের পর হত্যা রহস্য উদঘাটন করতে মাঠে নামে মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ। অবশেষে এ হত্যাকান্ডের মূল আসামি রিপন দেবনাথ (৪০)-কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ধারালো চাকু, নিহতের মোবাইল ফোনের ভাঙা অংশ ও সিমকার্ড উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) নোবেল চাকমা, পিপিএম।
তিনি আরও জানান, আসামি রিপন দেবনাথের সঙ্গে ভিকটিম ময়ুর মিয়ার সুদের টাকার লেনদেন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। সুদের টাকা পরিশোধ করলেও টাকা লেনদেনের চুক্তিনামা/স্ট্যাম্প ফেরত না দেওয়ায় রিপন ক্ষিপ্ত ছিল। ঘটনার দিন রাতে দেওরাছড়া বাগান থেকে দুজন একসাথে বাড়ি ফেরার সময় রিপন ময়ুর মিয়ার কাছ থেকে সেই ফেরত চান। স্ট্যাম্প ফেরত না দেওয়াকে কেন্দ্র করে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ধাক্কাধাকির একপর্যায়ে রিপন, ময়ুর মিয়াকে বাবনবিল ছড়ার ধারে নিয়ে যায়। সেখানে প্রথমে কিল-ঘুষি মেরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং মৃত্যু নিশ্চিত করতে ধারালো চাকু দিয়ে তিনবার আঘাত করে পালিয়ে যায়। এরপর চাকু রিপন দেবনাথ তার প্রতিবেশি নিবাস সাওতালের বাড়ির টয়লেটের ভেতর ফেলে দেয় এবং ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ও সিম কার্ড ভেঙে হামিদিয়া বাগানে ফেলে দেয়।
উল্লেখ্য, ১১ জুলাই রাতে দেওরাছড়া চা বাগানের বাবনবিল ছড়ায় স্থানীয়রা একটি লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
পরে নিহতের মেয়ে হালিমা বেগম কমলগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তথ্য প্রযুক্তি ও গোপন সূত্রের ভিত্তিতে গত ১৫ জুলাই রাতে কমলগঞ্জ মুন্সিবাজার এলাকা থেকে রিপন দেবনাথকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার বিষয়ে বিস্তারিত স্বীকারোক্তি প্রদান করে। তার দেখানো মতে হামিদিয়া চা বাগান এলাকা থেকে হত্যার আলামতসমূহ উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন শ্রীমঙ্গল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু জাফর মো. মাহফুজুল কবির।
মতামত জানান।
Editor and Publisher : Nityananda Sarkar,
News Editor- Arun Sarkar.