• ১৬ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১লা ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২২শে সফর, ১৪৪৭ হিজরি

মেডিকেল রিপোর্ট-এম্বাসি ছাড়া প্রবাসে পাড়ি দেওয়ার অপচেষ্টা, তোলপাড়!

admin
প্রকাশিত ১৫ আগস্ট, শুক্রবার, ২০২৫ ১৯:৫২:১৭
মেডিকেল রিপোর্ট-এম্বাসি ছাড়া প্রবাসে পাড়ি দেওয়ার অপচেষ্টা, তোলপাড়!

মোঃ জামাল আহমদ, স্টাফ রির্পোটার, সিলেট //


মেডিকেল রিপোর্ট ও এম্বাসি ছাড়া প্রবাসে পাড়ি দেওয়ার অপচেষ্টা করছেন একদল সিন্ডিকেট চক্র। এনিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন ভিসা প্রসেসিং কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, আমেরিকা ও কানাডা প্রবাসী দুইজন কনসালট্যান্ট এর সঙ্গে চুক্তি বদ্ধ হয়ে ইবি-৩ ওয়ার্ক পারমিটে ভিসা প্রসেসিং কার্যক্রম শুরু করেন সিলেট সদর দক্ষিণ সুরমা এলাকার কামুসেনা গ্রামের কবির আহমদ রুকনের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার।

স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে ভিসা প্রসেসিং কাজে হাত দেন ফাতেমা। এরমধ্যে বিগত জুলাই-আগষ্ট আন্দোলনে ভিসা প্রসেসিং কিছুটা ভাটা পড়ে যায়। থমকে যায় সকল কার্যক্রম। অবশেষে ৫ আগষ্টের পরে পরিস্থিতি শান্ত হলে বিদেশ গমন ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রসেসিং শুরু করলে একপর্যায় পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট, মেডিক্যাল রিপোর্ট ও এম্বাসিতে যোগদানের জন্য তাদের অনুরোধ করলে বেরিয়ে আসে থলেড় বিড়াল। শুরু হয় ওই সিন্টিকেট দলের বিভিন্ন অজুহাত। কৌশল অবলম্বন করে নিজেরা মেডিক্যাল রিপোর্ট ও এম্বসি ছাড়াই প্রবাসে পাড়ি দেওয়ার শর্ত গলায় ঝুলিয়ে দেয় ফাতেমা আক্তারের। এনিয়ে স্থানীয় পযায়ে একাধিক শালিস বৈঠক হলে সেখানে সিদ্ধান্ত হয় প্রবাস গমনকারীরা যেনো এম্বাসী মোকাবেলা করেন। পরে যদি কারো ভিসা পদ্ধতি সম্পন্ন না হয় তাহলে সকলের জমাকৃত টাকা ফেরৎ দেওয়ার। এছাড়া বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় মৌলভীবাজার জেলার আউদত্ত (বারহাল) গ্রামের মোঃ ফাহিম খাঁনের ছেলে সায়েম খানের দেয়া একুশ লক্ষ টাকার মধ্যে ইতিমধ্যে তিনি ৯লক্ষ টাকা ব্যাংক চেক মারফতে সমজিয়ে পেয়েছেন। অবশিষ্ট ১২ লক্ষ টাকা দুই কিস্তিতে পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

আজ শুক্রবার (১৫ আগষ্ট) ৫লক্ষ টাকা ও ২৫ আগষ্ট বাকি টাকা সমজিয়ে নেওয়ার কথা থাকলেও কোন কারন ছাড়াই মুঠোফোনে ওই টাকা গ্রহন করবেনা বলে সাফ জানিয়ে দেয়া হয়। রহস্যজনক হলেও সত্য যে, আদৌ ওই সিন্ডিকেট গোষ্টি শালিস বৈঠকের সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ফাতেমা আক্তারকে হেয় প্রতিপন্ন করতে বিভিন্ন ধরণের হুমকি-দমকি, অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। ফাতেমার বিরুদ্ধে কোটি টাকার উর্ধ্বে আত্মসাতের অভিযোগ এনে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে তিনি আত্মসম্মান নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীণতায় ভুগছেন।

এদিকে অনূসন্ধ্যানে দেখা যায় প্রত্যেকের সঙ্গেই ফাতেমা আক্তার তিনশ টাকার স্ট্যাম্পে চুক্তিনামায় লিপিবদ্ধ হয়েছেন। তারা সকলেই আবার তার আত্মীয়স্বজন হোন। লেনদেনকৃত সকল ডকুমেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমেই করা হয়েছে। এতে দেখা যায় ছয়জনের সঙ্গে অর্ধকোটি টাকার নিচে চুক্তিপত্র করেছেন ফাতেমা আক্তার। এরমধ্যে অনেকেই বিভিন্ন সময়ে অসময়ে নিজের অসুবিধা দেখিয়ে বেশ কিছু টাকা ফেরৎও নিয়েছেন। তারা হলেন- সায়েম খান, সফিকুল, রাহিন আহমদ, সাহেদ, সাকের আহমদ ও আব্দুল মালিক খান। সেখানে রয়েছেন একাধিক মামলার আসামী স্বৈারাচার পতনের লোক সফিকুল ও সাকের আহমদ।

এবিষয়ে জানতে মুঠোফোনে সায়েম খান, রাহিন আহমদ ও সাহেদ এর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা শালিস বৈঠকসহ অন্যান্য বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, আমরা প্রবাসে যাওয়ার জন্য টাকা জমা দিয়েছি। ওই মহিলা আমাদের যথা সময়ে কাজ করে দিতে পারেননি। আপনারা সাংবাদিক দয়া করে বিষয়টি একটু দেখবেন। এদিকে সায়েম খান ৯লক্ষ টাকা সমজিয়ে পেয়েছেন বলেও প্রতিবেদক’কে জানিয়েছেন। অন্য দুইজন কোন টাকা ফেরত পাননি বলে জানান। অপর তিনজনের মধ্যে সফিকুল ও সাকের পলাতক থাকায় কোনও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে আব্দুল মালিকের মুঠোফোনে কল দিলে রিসিভ না হওয়ায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

অপরদিকে ফাতেমা আক্তারের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমাকে মহিলা পেয়ে তারা যা ইচ্ছে তা করছে। আমার কাছে সকল ডকুমেন্ট রয়েছে। অনেকে টাকা নিয়ে অস্বীকার করছে প্রয়োজনে আমি আইনের দ্বারস্থ্য হবো। তিনি আরো বলেন, আমি কোন দালাল বা প্রতারক নই। আমার কোন ট্রাভেল এজন্সি নেই। আমি মানব পাচার করিনা। তারা সকলেই আমার আত্মীয় স্বজন। সম্প্রতি তারা আমাকে ও আমার আত্মীয় স্বজনদের মানক্ষুন্ন করতে উঠেপড়ে লেগেছে। তিনিও এসময় সাংবাদিকদের সহযোগীতা কামনা করেন।

নিয়মিত সংবাদ পড়ুন, মতামত জানান।