এসআই আশরাফ বাম দিকে ও সাবেক ওসি তাজুল ডান দিকে, ছবি-সংগৃহীত।
জামাল আহমদ, জৈন্তাপুর থেকে ঘুরে এসে সিলেট প্রতিনিধি //
সিলেটের জৈন্তাপুর মডেল থানার সাবেক শীর্ষ দুর্নীতিবাজ ওসি তাজুল বদলি হলেও তার সহযোগী প্রেতাত্বা থানায় এখনো বহাল রয়েছে। চোরাকারবারি, পাথর-বালু মহাল থেকে শুরু করে এমন কোন খাত নেই চাঁদা আদায় করনেনি সাবেক ওসি’র ঐ শিষ্য এসআই আশরাফ। রহস্যজনক কারনে তিনি এখনো জৈন্তাপুর মডেল থানায় বিশাল তবিয়তে থেকে আড়াল হতে চাঁদা আদায় বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জৈন্তাপুর মডেল থানা (উপজেলায়) এমন কোন চোরাকারবারি, বালু-পাথর ও ভূমি খেঁকো সিন্ডিকেট সদস্য নেই যে তার সাথে তাদের কোন গভীর আন্তঃসর্ম্পক নেই। রাত হলেই জৈন্তাপুর সীমান্ত এলাকা দিয়ে যে সকল অবৈধ ভারতীয় পণ্য বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে তার হিসেবের নথি ওই কর্তার পকেটে থাকে। শীর্ষ চোরাকারবারি কোটিপতি থেকে শুরু করে অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গেও তার শ্বশুড়-জামাতার সর্ম্পক। আবার চাঁদা না পেলে গণেশ উল্টে দেন মূহুর্তে। তাদের সঙগ দিতে অভিযানের নামে নাটকের মঞ্চ তৈরি করেন তিনি। তার বেশিরভাগ অভিযান পরিচালনায় দেখা যায় আসামি আটক ছাড়া মালামাল জব্দ ।
অভিযোগ রয়েছে ওই সিন্ডিকেটগ্রুপ তাদের ব্যাবসাকে ত্বরান্বিত করতে ও এসআই আশরাফকে বহাল তবিয়তে রাখতে এই কৌশল অবলম্বন করেন। জিরো থেকে কোটিপতি সকলেরই তালিকা তার হাতের মুঠোয় তিনি তালুবন্দি করে রেখেছেন।
এদিকে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি প্রতিবেদক’কে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগে বিরোধী রাজনৈতিক দলের অনেকে তার ভয়ে ঘড়ছাড়াও ছিলেন। ছন্নছাড়া ছিল তার চলাফেরা। মাস দু’এক পূর্বের তার ব্যক্তিগত মুঠোফোন রের্কড পর্যালোচনা করলে বেরিয়ে আসবে এসব কূ-কর্মের চাঞ্চল্যকর ভয়াবহ তথ্য। স্থানীয়দের মতে এসআই আশরাফ জৈন্তাপুর মডেল থানায় যোগদানের পর থেকে ঢালাওভাবে ওই উপজেলায় বেড়ে যায় অনিয়ম-দুর্নীতি ও চোরাকারবারী’র মহোৎসব। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নেয়া চাকুরী ওসি তাজুলের ছাত্র-ছায়ায় থেকে এসআই আশরাফ অল্পদিনে জৈন্তাপুর রাজ করতে থাকেন।
অপরদিকে থানা পুলিশের একটি সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে এর আগে এসআই আশরাফ ও জৈন্তাপুরের বর্তমান নবাগত ওসি একসঙ্গে অন্য থানায় কাজ করেছেন। তবে জৈন্তাপুর মডেল থানার নবাগত ওসি প্রতিবেদক’র নিকট বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
এনিয়ে স্থানীয় সচেতন মহল মনে করেন প্রশাসনের উর্ধ্বতন কতৃপক্ষ’র সু-দৃষ্টি থাকলে যেকোন অনিয়ম, ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধ করা মাত্র সময়ের ব্যাপার। এসময় তারা আরও বলেন এরকম কতিপয় অসাধু পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করলে অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ হবে অন্যথায় দুর্নীতি বন্ধ করা যাবেনা। এছাড়া স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শীর্ষ চোরাকারবারি ও দুর্নীতিবাজদের তালিকা সম্পন্ন করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)’কে মাঠ পর্যায়ে কাজ করার সূযোগ করে দিলে অবৈধ পন্থায় বনে যাওয়া জিরো থেকে কোটিপতিরাও আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।