• ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

আইন-শৃঙ্খলা উন্নতি ও সুদের হার কমিয়ে নীতিমালা সংস্কার জরুরি

admin
প্রকাশিত ০৫ অক্টোবর, শনিবার, ২০২৪ ১৯:০৬:৪৫
আইন-শৃঙ্খলা উন্নতি ও সুদের হার কমিয়ে নীতিমালা সংস্কার জরুরি

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক //


শিল্পখাতে উন্নয়নের জন্য আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, সুদের হার কমানো, এবং নীতিমালা সংস্কার জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন দেশের বিশিষ্ট শিল্পপতি ও অর্থনীতিবিদরা।

শনিবার (৫ অক্টোবর) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ পথনির্দেশক’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এই আহ্বান জানান।

ডিসিসিআই সভাপতি আশরাফ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় বক্তারা বলেন, কোভিড পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করলেও বর্তমানে শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক অসন্তোষ, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, এবং ব্যাংক ঋণের সুদের উচ্চ হার শিল্পখাতের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করছে। শিল্পাঞ্চলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে উদ্যোক্তারা অনিশ্চয়তায় রয়েছেন। একইসাথে কাঁচামাল আমদানিতে দীর্ঘসূত্রিতা উৎপাদন ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এছাড়া, তারল্য সংকটের কারণে উদ্যোক্তারা প্রয়োজনীয় ঋণ সুবিধা পাচ্ছেন না বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সভায় এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন বলেন, ১৫ শতাংশ সুদ দিয়ে শিল্প খাতে ব্যবসা করা কঠিন। তিনি কাস্টমস হাউজে দুর্নীতি কমিয়ে অটোমেশন নিশ্চিত করার পাশাপাশি, মধ্যম আয়ের জনগোষ্ঠীকে করের আওতায় আনার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, গ্যাস সরবরাহে সুষ্ঠু ব্যবস্থা না থাকায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, যা অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর।

লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, দক্ষ নিয়োগ ব্যবস্থাপনা এবং শিল্পাঞ্চলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা জরুরি। তিনি উল্লেখ করেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং ব্যাংক ঋণের সুদের হার বৃদ্ধির কারণে ব্যবসায়ীরা সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছেন।

বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, শ্রমিক অসন্তোষের পেছনে অনুপ্রবেশকারীদের ভূমিকা রয়েছে। শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক জোরদার করতে হবে এবং শিল্পাঞ্চলে শান্তি রক্ষা করতে হবে।

ডিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, শিল্প কারখানায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির ফলে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে প্রভাব ফেলতে পারে। তিনি এলডিসি থেকে উত্তরণে প্রস্তুতির অভাব উল্লেখ করে এ বিষয়ে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. মাসরুর রিয়াজ বলেন, গত ২ বছরে অর্থনৈতিক সমস্যাগুলোর কার্যকর সমাধান না পাওয়ার কারণে ব্যবসায়ীদের আস্থা কমে গেছে। তিনি বলেন, ব্যাংক ঋণের সুদের হার না কমানো গেলে অর্থনীতিতে আরও সংকট দেখা দিতে পারে।

এছাড়া প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী, মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল এবং ফুডপান্ডা বাংলাদেশের সিইও আমব্রারিন রেজা শিল্পখাতের নানা সংকট উত্তরণের জন্য নীতিগত সহায়তা এবং প্রণোদনা প্রদানের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

গোলটেবিল আলোচনায় ডিসিসিআই’র ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারীসহ বিভিন্ন শিল্পখাতের উদ্যোক্তা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।