বাহুবল (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি //
হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার মিরপুর বাজারে চোরের অপবাদে দুই ব্যবসায়ীকে মধ্যপযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়, নির্যাতনের ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ায় আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। অবশেষে কোন উপায় না পেয়ে বাজার কমিটির লোকজন তাদেরকে মাথা ন্যাড়া করে চোর সাজিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন।
এলাকাবাসী জানান, গত ৬ অক্টোবর মিরপুর বাজারে কুটুম বাড়ি মিষ্টির দোকানে চুরি হয়। এ ঘটনায় পরদিন ৭ অক্টোবর রাত ৮টায় বাজার কমিটির আহবায়ক মোতাব্বির হোসেন ব্যবসায়ী সেলিম মিয়া ও হোটেল ব্যবসায়ী সোহানকে তার লোকজন দিয়ে আটক করে বাজারে একটি ঘরে নিয়ে যান। সেখানে রাতভর তালাবদ্ধ করে তাদের উপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়। পরদিন ৮ অক্টোবর দিন-দুপুরে বাজারে লোকজনের সামনে মোতাব্বির হোসেনের নির্দেশে বশর উদ্দিনের পুত্র নানু মিয়া, অনু উদ্দিনের পুত্র ফরিদ মিয়া, আরফান, নিমাই উল্লার পুত্র হারুন, আল-আমিন, জুয়েল, সমসু মিয়াসহ বেশ কয়েকজন মিলে সেলিম ও সোহানকে হাত-পা বেঁধে রাস্তায় ফেলে লাঠি দিয়ে গরুর মত পিঠানো হয়। এক পর্যায়ে তাদের মাথা ন্যাড়া করে সারা বাজার ঘুরানো হয়। এরপরও তারা থেমে থাকেননি। তাদেরকে আবারো ঘরে নিয়ে আটকে রেখে মোতাব্বির হোসেন সেলিমের ভাই ও সোহানের পিতার কাছে মুক্তিপণ দাবি করেন। মুক্তিপণ না দেওয়ায় দুইদিন আটকে রেখে নির্যাতন করে ৯ অক্টোবর বাহুবল থানায় খবর দিলে এসআই মঞ্জুর হোসেন ঘটনাস্থল থেকে আসামীদের থানায় নিয়ে যান এবং সাজানো একটি মামলা দিয়ে তাদেরকে ওইদিন বিকেলে কোর্টে পাঠানো হয়। এর আগে এসআই মঞ্জুর হোসেন চুরির সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ওই দুইজনকে সনাক্ত করেননি এবং থানায় নিতে অনিহা প্রকাশ করলে মোতাব্বির হোসেন ও তার লোকজনের তোপের মুখে তাদেরকে থানায় নিতে বাধ্য হন। এ রকম একটি বর্বরোচিত নির্যাতনের কাহিনী আইয়াম্মে জাহেলিয়াতকেও হার মানিয়েছে। এদিকে এলাকাবাসী এসব নির্যাতনকারীদের বিচার দাবি করছেন।
এ বিষয়ে বাহুবল থানার অফিসার ইনচার্জ জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে দুইজন চোরকে মিরপুর বাজার কমিটি পুলিশে সোপর্দ করেছেন। যদি তারা এমন করে থাকেন তাহলে বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।