• ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

জৈন্তাপুরে চাঁদাবাজ চক্রের সংবাদ সম্মেলন, ফেসবুকে ভিডিও ভাইরাল!

admin
প্রকাশিত ১৮ অক্টোবর, শুক্রবার, ২০২৪ ০৩:০৫:৪৯
জৈন্তাপুরে চাঁদাবাজ চক্রের সংবাদ সম্মেলন, ফেসবুকে ভিডিও ভাইরাল!

শীর্ষ চাঁদাবাজ আবুল হাসিম, ছবি-সংগৃহীত।
জামাল আহমদ, স্টাফ রির্পোটার সিলেট //

।ফলোআপ। সিলেট জেলা যুবদল নেতা আবুল হাসিমের বিরুদ্ধে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ শিরোনাম এনে দ্য ডেইলি মর্নিংসান পত্রিকায় (১৭ অক্টোবর) একটি সংবাদ প্রকাশিত হলে অবশেষে টনক নড়েছে ওই সিন্ডিকেট চক্রের। যারা উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত তারা সকলেই একযোগে ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নিতে জজ মিয়া নাটক সাজিয়ে নিজেদের রক্ষা করতে বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) জৈন্তাপুর প্রেসক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন করেছে। স্বাধীন সাংবাদিকতকার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বিরুপ মন্তব্য করতে তারা দ্বিধাবোধ করেনি। মূল ধারার সাংবাদিকতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে এই সংবাদ সম্মেলনকে ঘিরে।

যার আয়োজনে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল হাসিম। ইতিমধ্যে তাদের চাঁদা আদায়ের অডিও-ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সেই তথ্য অনুযায়ি চাঁদা আদায় করছেন মর্মে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্ধি দিয়েছেন আমির উদ্দিন নামক এক জনৈক ব্যক্তি নিজেই। সেখানে তিনি তার বক্তব্যকালে চাঁদা দেওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন। এছাড়াও আবুল হাসিমসহ অপর সহযোগীদের নাম উল্লেখ করতে শুনা যায় তার মুখেই। সংবাদ প্রকাশকালে আত্মপক্ষ সমর্থনের সূযোগ দেওয়ার পরেও নিজেদের কূ-কর্ম ঢাকতে বৃহস্পতিবার তারা জৈন্তাপুর প্রেসক্লাবে উপস্থিত থেকে জজ মিয়া নাটক সাজিয়ে পার পাওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত। নাটের গুরু আমির উদ্দিন এই ভিডিও ফুটেজ বার্তা ছাড়াও যখন প্রতিবেদক মুঠোফোনে তাকে আত্মসমর্থনের সূযোগ দেন তখন তিনি বিষয়টি আরও খোলাসা করে বলেন, উপজেলা পর্যায়ের ১৪-১৫ জন বিএনপি নেতাদের নাম ভাঙ্গিয়ে এই টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। এর আগে কামাল ওই টাকা সংগ্রহ করতেন। তিনিও নেতাকর্মীদের নাম ভাঙ্গিয়ে টাকা হাতিয়ে নিতেন। তাহলে প্রশ্ন থেকে যায় ওয়ার্কপারমিট থাকলে কেনও দলের নাম ব্যবহার করে চাঁদা উত্তোলন করা হতো? তাও আবার সেই চাঁদা উপজেলা বিএনপির নামবিহীন নেতাকর্মীদের নামে। যখন আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া আবুল হাসিমকে তখন তিনি চাঁদা আদায়ের বিষয়টি এড়িয়ে যান।

আরেকটি অডিও বার্তায় আবুল হাসিম বলতে শুনা যায় জৈন্তাপুর মডেল থানার ওসি ও বিজিবি’র নামওে চাঁদা প্রসঙ্গ। এতে স্পষ্ট প্রতিয়মান হয় “ডাল মে কুচ কালাহে”। এতকিছুর পরেও সিন্ডিকেট চক্র একযোগে সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়ে নিজেদের নির্দোশ দাবি করে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ-নিন্দাসহ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মামলার হুমকি প্রদান করে। এটা বলতে গেলে যা পুরো মিডিয়ার জন্য হুমকি। কিন্তু রহস্যজনক হলেও সত্য যে, চাঁদাবাজির সংবাদ প্রকাশের পর দ্য ডেইলি মর্নিংসান পত্রিকায় এখনো তারা কোনও প্রতিবাদ বা নিন্দা জানায়নি। সংবাদ সম্মেলনে মনগড়া মিথ্যা বানোয়াট উদ্দেশ্য প্রণোদিত বক্তব্য পেশ করে তারা তাদের আসল চরিত্র জাতির সামনে তুলে ধরলো।

এদিকে বৃহস্পতিবার আরও একটি সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ দ্য ডেইলি মর্নিং সান পত্রিকার প্রতিবেদকের হাতে এসে পৌছায় সেখানেও দেখা যায় আবুল হাসিমসহ তার সহযোগীরা কিভাবে চাঁদা আদায় করছে। পাশাপাশি আরেকটি অডিও রের্কডে মিলে চাঁদা ভাগবাটোয়ারার চাঞ্চল্যকর তথ্য। সেই রের্কডে একজন চেয়ারম্যানসহ বেশ কয়েকজনের নাম রয়েছে। তাও ওই চেয়ারম্যানের সামনে বলা হচ্ছে সাংবাদিকদের চাঁদা দেওয়া-নেওয়ার বিষয়টিও। সেখানে একটাকা বের হলে একটি অংশ দেওয়ার কথা বলতে শুনা যায়। না দিলে নিউজ প্রকাশ বন্ধ করা যাবে না বলেও মন্তব্য করা হচ্ছে। এছাড়াও বিজিবি লাইন নিয়েও আলাপচারিতা করা হয়। কে কিভাবে টাকা তুলবেন সেই বিষয়টিও তাদের আলাপে উঠে আসে। সেই বক্তব্য শুনলে শরীর আতকে উঠবে। অথচ সেই চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট চক্র জৈন্তাপুর প্রেসক্লাবে বসে সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের বিশাল তবিয়তে রাখার অপচেষ্টায় লিপ্ত। উল্টো ওই কথিত গোষ্ঠি বিশিষ্ট সিনিয়র সাংবাদিক অরুন সরকার ও জামাল আহমদ এর নামে প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে দিতে ওঠেপড়ে লেগেছে। আর তাদের পেছনে মদদ দিচ্ছে কতিপয় অসাধু চাঁদাবাজ হলুদ সংবাদকর্মীরা। শুধু তাই নয় সংবাদ সম্মেলনে তারা যাদের নাম জড়ানোর চেষ্টা করতেছে তাদেরও কোনও বক্তব্য নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি সংবাদ সম্মেলনে থাকা কোনও সংবাদকর্মী। এতে গনমাধ্যমের মূল ধারাকে চরম লংঙ্গন করা হয়েছে। বৈষম্য বিরোধি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীন হওয়ার পর অন্তবর্তীকালীন ইউনূস সরকার ক্ষমতায় আসলে সাংবাদিকদের স্বাধীন ভাবে অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশে একাত্বতা ঘোষণা করলেও কতিপয় অসাধূ চক্র নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে তারা উঠেপড়ে লেগেছে।

এদিকে দেশের আইনশৃংখলাবাহিনী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো যখন একত্রে দেশ থেকে অনিয়ম দুর্নীতি দূর করতে অঙ্গিকারবদ্ধ ঠিক তখনি কতিপয় চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট চক্র নামে-বেনামে এসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। এখন জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে দলের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজ চক্ররা কি পার পেয়ে যাবে? যদিও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রিয় নেতাকর্মীদের কঠোর বার্তা রয়েছে কিন্তু ওই কতিপয় গোষ্টি দুর্নীতির পিছু ছাড়ছেনা।

চাঁদাবাজ চক্রের সংবাদ সম্মেলন বিষয়ে জৈন্তাপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি নূরুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, প্রেস কনফারেন্স চলাকালে তিনি সেখানে ছিলেননা। আত্মপক্ষ সমর্থনের কথা বললে তিনি কোন সদ্বত্তোর দিতে পারেননি। আসছে পরবর্তী সংবাদ….