• ২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৪শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ২৫০ প্রশিক্ষণার্থী এসআইকে অব্যাহতি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

admin
প্রকাশিত ২২ অক্টোবর, মঙ্গলবার, ২০২৪ ১৭:৪৮:০৩
শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ২৫০ প্রশিক্ষণার্থী এসআইকে অব্যাহতি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ঢাকা //


শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির ২৫০ প্রশিক্ষণার্থী ক্যাডেট এসআইকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তবে এটি কোনো রাজনৈতিক কারণে হয়নি বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিংকালে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এসআই অব্যাহতির পেছনে রাজনৈতিক কোনো কারণ নেই। অতীতে এর থেকেও বেশি পরিমাণ অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। শৃঙ্খলাভঙ্গের বিষয়টি সারদা পুলিশ একাডেমি বলতে পারবে। অনেক ধরনের শৃঙ্খলাভঙ্গ হতে পারে। এটা কোনো বিষয় না। নতুন সার্কুলার দেয়া হয়েছে দ্রুত নিয়োগ দেয়া হবে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যে কোনো আন্দোলনে উসকানিদাতাদের রাজনৈতিক পরিচয় অনুসন্ধান করতে হবে। জামিনে মুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসীরা যেন আর অপরাধে জড়াতে না পারে সতর্ক থাকতে হবে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার নিয়ে আলোচনা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে।

এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শাহবাগের পরিবর্তে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সভা-সমাবেশ করার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন।

এর আগে ট্রেনিংয়ে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি থেকে ৮২৩ জন ক্যাডেট এসআইয়ের মধ্যে ২৫০ প্রশিক্ষণার্থীকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

সোমবার (২১ অক্টোবর) একাডেমির অধ্যক্ষের পক্ষে পুলিশ সুপার (অ্যাডমিন অ্যান্ড লজিস্টিক) তারেক বিন রশিদ স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ আদেশ দেয়া হয়। সোমবার স্থানীয় থানাগুলোতে ডেকে তাদের হাতে এই চিঠি দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির প্রিন্সিপাল মাসুদূর রহমান ভুইয়া। তিনি জানান, বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণরত উপপরিদর্শক (এসআই) ব্যাচের ২৫০ জনকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি প্যারেড মাঠে ১ অক্টোবর সকাল ৭টা ২৫ মিনিট থেকে ৪০তম বিসিএস (পুলিশ) প্রবেশনারস ব্যাচ-২০২৩ এর সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুশীলন প্যারেড কার্যক্রম চলমান ছিল। এ সময়ে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি সারদা, রাজশাহী কর্তৃক পূর্বনির্ধারিত মেনু অনুযায়ী প্যারেডে অংশগ্রহণকারী সব প্রশিক্ষণার্থীর প্যারেড বিরতিতে সকালের নাশতা পরিবেশন করা হয়। কিন্তু আপনি ওই সরবরাহকৃত নাশতা না খেয়ে হইচই করে মাঠের মধ্যে চরম বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করেন। আপনি অন্যান্য প্রশিক্ষণরত ক্যাডেট এসআইদের পরস্পর সংগঠিত করে একাডেমি কর্তৃপক্ষকে হেয়প্রতিপন্ন করে চরম বিশৃঙ্খলা ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করতে থাকেন। এ ছাড়া আপনি অন্যদের সঙ্গে হইচই করতে করতে নিজের খেয়ালখুশিমতো প্রশিক্ষণ মাঠ থেকে বের হয়ে নিজ ব্যারাকে চলে যান। একজন প্রশিক্ষণরত ক্যাডেট এসআই হিসেবে এরূপ আচরণ এবং বিনা অনুমতিতে প্যারেড মাঠ থেকে বের হয়ে নিজ ব্যারাকে চলে যাওয়া সম্পূর্ণভাবে শৃঙ্খলাপরিপন্থি। আপনার এরূপ আচরণ মাঠের সার্বিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে চরমভাবে ব্যাহত করেছে এবং অন্য প্রশিক্ষণার্থীদের শৃঙ্খলাভঙ্গে উৎসাহিত করেছে মর্মে আপনার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে পুলিশ পরিদর্শক মহসিন আলী (বিপি- ৬৯/৮৭০০১৫২০) বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষ (অতিরিক্ত আইজিপি) বরাবর লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।

চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, ওই অভিযোগের কারণে একাডেমির অধ্যক্ষের পক্ষে পুলিশ সুপার (অ্যাডমিন অ্যান্ড লজিস্টিকস) তিন দিনের মধ্যে কৈফিয়তের জবাব দাখিল করার জন্য নির্দেশনা দেন। আপনি নির্ধারিত তিন দিন সময়ের মধ্যে কৈফিয়তের জবাব দাখিল করেন। আপনার দাখিলকৃত কৈফিয়তের জবাব পর্যালোচনান্তে সন্তোষজনক নয় মর্মে প্রতীয়মান হয়। আপনার উপরোক্ত শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ড বাংলাদেশ পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ ও দায়িত্বশীল পদ হিসেবে বিবেচিত সাব-ইন্সপেক্টর পদে কাজ করার পথে বড় ধরনের অন্তরায় ও অযোগ্যতার শামিল।

২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর ৮২৩ ক্যাডেট এসআই সদস্যদের ট্রেনিং শুরু হয়েছিল। প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৪ সালের ৪ নভেম্বর।