filter: 0; fileterIntensity: 0.0; filterMask: 0; captureOrientation: 0;
brp_mask:0;
brp_del_th:null;
brp_del_sen:null;
delta:null;
module: photo;hw-remosaic: false;touch: (-1.0, -1.0);sceneMode: 8;cct_value: 0;AI_Scene: (-1, -1);aec_lux: 0.0;aec_lux_index: 0;albedo: ;confidence: ;motionLevel: -1;weatherinfo: null;temperature: 41;
শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিবেদক //
বেদখলে বিলিন হয়ে পড়ছে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার মরা নদী বিলাস। দখলদাররা প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে বিলাস নদীর বিভিন্ন অংশে বাড়িঘর, মহিষ্যের বাতান, ধানের বীজতলাসহ নানান স্থাপনা বানিয়ে দখল করে নিচ্ছে। বে-দখল করে নিলেও একে অন্যকে সরাতে গিয়ে নিজেদের মধ্য বাক-বিতন্ডায়ও জড়িয়ে পড়ছেন। এসব দখলদারদের মধ্য অন্যতম ভূমিকা পালন করছেন জনৈক ব্যক্তি আব্দুল হান্নান।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, হান্নান মিয়া বিলাস নদীর বিভিন্ন অংশ বেদখল করে রেখেছেন। নতুন করে তিনি রাজা ফিসারীর বিপরীতে বিলাস নদীর বিশাল এলাকা বেদখল করে গড়ে তোলছেন বীজতলা। গতকাল বুধবার সকালে হান্নান মিয়ার ছেলে মাসুম মিয়া একটি ইউক্লেপটাস গাছ কাটলে এলাকাবাসী প্রশাসন ও গণমাধ্যমকে খবর দেয়। খবর পেয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা সরজমিনে গিয়ে দেখতে পান মরা বিলাসে প্রায় দুই বিঘা জমি বীজতলার জন্য তৈরী করছেন দুইজন কৃষক। ব্রিটিশ-বাংলা এগ্রো লিমিটেডের সামনে মরা বিলাস নদীর অংশে ধানের বীজ রোপনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন শ্রমিকরা। ওই স্থানে সরকারি গ্রামীন সড়কের পাশে রয়েছে একটি কাটা গাছ। এসময় স্থানীয়রা জানান, আব্দুল হান্নান জোরপূর্বক মরা বিলাস নদীর সরকারি জমি বেদখল করে চাষাবাদ করছেন। আর গাছটি কেটেছেন তার পুত্র মাসুম মিয়া। মরা বিলাস নদীর সরকারি ভূমিতে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ইউসুফ মিয়া বলেন, ‘আমাদেরকে হান্নান মিয়া বীজতলা তৈরীর জন্য কাজে লাগিয়েছেন। জমিটি বিলাস নদীর এবং সরকারি হলেও আমরা শ্রমিক মানুষ। হান্নানের কথায় এখানে কাজ করতে এসেছি।’
স্থানীয় বাসিন্দা ইলিয়াস মিয়া বলেন, এখানে সরকারি জায়গায় বীজতলা করছে হান্নান মিয়া। ফলে পানি যাওয়ার জায়গা বন্ধ হয়ে গেছে। উজানে হান্নান মিয়ার বেদখলে আরো জায়গা আছে। তিনি মরা গাঙের বিভিন্ন অংশ সরকারি জায়গা বেদখল করে নিয়েছেন। কেউ বাঁধা দিলে হামলা-মালার হুমকি দামকি দেন।
মতিগঞ্জ বিলাসের পাড়ে অবস্থিত ব্রিটিশ-বাংলা এগ্রো লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মো. হারুনুর রশীদ হারুন বলেন, ১৩ বছর যাবত আমি ব্রিটিশ-বাংলায় চাকরী করছি। আমার দেখা মতে হান্নান মিয়া ও তার ছেলে মাসুম মিয়া পুরো মরা নদীর বিশাল অংশ ভোগদখল করে রেখেছেন। আমাদের ফিসারীর সামনের অংশে যখন তারা দখল করেছে তখন আমি বাধা দিতে আসলে তারা (হান্নান মিয়া ও তার ছেলে মাসুম) আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে ও মারধর করে। আমাদের একটি পানির মোটর চুরি হয়, তার ছেলে আমাদের ফিসারীর মাছ চুরি করে। আমাদের গার্ড একদিন হান্নানের ছেলে মাসুমকে ৯ নম্বর পুকুরে মাছ চুরির সময় দেখে ফেলে। তাকে ধরার চেষ্টা করে। সে দৌড়ে পালিয়ে যায়। সেটার কোন প্রতিবাদ হলো না। আমাকে মারারও কোন প্রতিবাদ হলো না। এ ধরণের অত্যাচার-নির্যাতন সব সময় করে আসছে হান্নান ও তার ছেলে।
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা মখলিছ মিয়া বলেন, এক সময়ের খরস্রোতা বিলাস নদীর মরা অংশে শুস্ক মৌসুমে পানি থাকেনা। এ অংশের মতিগঞ্জ এলাকার মরা বিলাস নদী জবরদখল করে চাষাবাদ করছেন আব্দুল হান্নান। শুধু চাষাবাদ নয় মরা নদীর পাড়ের মাটি কেটে বিক্রি, সড়কের পাশের গাছ কর্তন, স্থানীয় ফিসারীগুলো থেকে মাছ চুরি, সরকারি মালিকানাধীন মরা নদীর অংশে গরু-মহিষের বাথান করে ভাড়া প্রদান ও নদীর জায়গা দখল করে হ্যাচারী স্থাপনের অভিযোগ ওঠেছে আব্দুল হান্নানের বিরুদ্ধে।
অভিযোগের ব্যাপারে মো. আব্দুল হান্নান বলেন, তিনি নদীর জমি নয় নিজের জমিতে হ্যাচারী দিয়েছেন। তবে নদীর ‘পতিত জায়গায় আমি বোরো ফসলের জন্য হালির জালা ফেলবো। এক থেকে দেড় মাস পরে বোরো ধানের চারা কিছুটা বড় হলে আমি এখান থেকে তুলে অন্যত্র আমার জমিতে নিয়ে রোপন করবো। এরপর এ জায়গা এমনিতেই পড়ে থাকবে। তিনি বলেন, এখনতো বর্ষাকাল নয়, তাই এ মরা গাংঙে পানি নাই। ফলে আমি জালা ফালাইছি। বোরো ধানের জালা ফালানোর জন্য আমি শ্রমিক দিয়ে এই জায়গাটি ঠিকঠাকও করেছি। তার ছেলে মাসুম মিয়া কর্তৃক সরকারি ভূমির গাছ কাটার ব্যাপারে প্রশ্ন করলে আব্দুল হান্নান বলেন, গাছ যে কাটছে তা আমি জানতাম না। আমার ছেলে গাছ কেটে ভুল করেছে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সালাউদ্দিন বিশ্বাস দ্য ডেইলিমর্নিংসান’কে বলেন, ঘটনা শুনে আমি আমাদের ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। যদি কেউ বেআইনী কাজ করে থাকে এবং আমাদের তদন্তে আসে, তবে আমরা বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেবো।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল সহকারী ভূমি কর্মকর্তা শরবিন্দু দত্ত জানান, সরজমিনে গিয়ে হান্নান মিয়া কর্তৃক দখলের সত্যতা পাওয়া গেছে। আইনানুগ ব্যবস্থা তিনি বিষয়টি উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি)’কে অবগত করেছেন।
আব্দুল হান্নান ছাড়াও বিলাস নদীর আরো বিভিন্ন অংশে অন্যান্য মানুষও বেদখল করে রেখেছেন। স্থানীয়দের দাবি প্রশাসন যেনো দ্রুত এসব দখলদারদের হাত থেকে নদীর জমি উদ্ধার করে নদীটি রক্ষা করেন।