ছবি-সংগৃহীত।
অনলাইন ডেস্ক //
তেল-নির্ভর অর্থনীতির দেশ সৌদি আরবকে আমূল বদলে দিচ্ছেন ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। তার দূরদর্শী পরিকল্পনা ও সাহসী সিদ্ধান্তে নতুন গতি পেয়েছে দেশটির অর্থনীতি। বিশ্বকে অবাক করে দিয়ে একের পর এক মেগা প্রকল্প হাতে নিচ্ছেন তিনি। তার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে সৌদি আরব বিশ্ব পর্যটনের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে।
২০১৭ সালে ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর সালমান উন্মোচন করেন ভিশন ২০৩০। এর আওতায় তাবুক অঞ্চলে ৫০০ বিলিয়ন ডলারের মেগাসিটি প্রকল্প ‘নয়েম’-এর ঘোষণা দেন। শুরুতে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়লেও সালমান তার অবস্থান পরিবর্তন করেননি। নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেও তিনি এগিয়ে নিয়েছেন এসব প্রকল্প।
তবে ২০১৮ সালে সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যার ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনা এবং ২০২২ সালে জো বাইডেনের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার হুমকির মুখে পড়তে হয়েছিল সালমানকে। সেই সময় বিশ্বজুড়ে তেলের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়ে বাইডেনের প্রতিশ্রুতি ভেস্তে দেন তিনি।
পরবর্তীতে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি করেন সালমান। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে বাইডেন তেলের দাম কমানোর অনুরোধ জানালেও তা প্রত্যাখ্যান করেন তিনি। মার্কিন কূটনীতিকদের বিস্মিত করা এ সিদ্ধান্তে সৌদি আরবের শক্ত অবস্থান উঠে আসে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সালমানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও সৌদি আরবের কূটনৈতিক সুবিধা বৃদ্ধির সম্ভাবনা তৈরি করেছে।
ক্ষমতার শুরুতে সাংস্কৃতিক সংস্কার, নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি, লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণ এবং বিনোদনমূলক ইভেন্ট চালুর মতো সাহসী পদক্ষেপের জন্য সমালোচিত হন সালমান। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এসব উদ্যোগ সৌদি আরবের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।
বিশ্ব পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে নয়েম মেগাসিটির নির্মাণকাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। এ প্রকল্প সফল হলে সৌদি আরব ভ্রমণপিপাসুদের অন্যতম গন্তব্যে পরিণত হবে। এছাড়া ২০৩৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করছে দেশটি। ফুটবলে ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো, নেইমার, করিম বেনজেমার মতো তারকাদের সৌদির ক্লাবগুলোতে যুক্ত করা হয়েছে, যার পেছনেও রয়েছে সালমানের সক্রিয় ভূমিকা।
মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে সৌদি আরব শুধু অর্থনীতিতেই নয়, ক্রীড়াঙ্গন ও সংস্কৃতিতেও এক নতুন উচ্চতায় পা রাখছে।