• ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সিপিবির উদ্যোগে আন্তর্জাতিক প্যালেস্টাইন সংহতি সভা অনুষ্ঠিত

admin
প্রকাশিত ২৯ নভেম্বর, শুক্রবার, ২০২৪ ১৭:৩৪:১৬
সিপিবির উদ্যোগে আন্তর্জাতিক প্যালেস্টাইন সংহতি সভা অনুষ্ঠিত

ঢাকা //


প্যালেস্টাইনের জনগণের সঙ্গে সংহতির আন্তর্জাতিক দিবসে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) উদ্যোগে আন্তর্জাতিক প্যালেস্টাইন সংহতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে সংহতি সভা শুরু হয়।

সিপিবি সভাপতি মো. শাহ আলমের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত প্যালেস্টাইনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান। সূচনা বক্তব্য উত্থাপন করেন সিপিবির আন্তর্জাতিক বিভাগের প্রধান এবং সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাসান তারিক চৌধুরী। বক্তব্য দেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহিন রহমান, সিনিয়র সাংবাদিক সোহরাব হাসান, ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের সভাপতি ডা. আবু সাইদ, শান্তি পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. শাকিল আক্তার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিপিবির কেন্দ্রীয় সদস্য লাকী আক্তার।

প্যালেস্টাইনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিকভাবে প্যালেস্টাইনের জনগণের প্রতি বিশেষ সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। সত্তরের দশকের শুরুর দিকে ১৯৭৩ সালে প্যালেস্টাইনের জনগণের কাছে চিকিৎসাসামগ্রী পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। প্যালেস্টাইনের মানুষ সব সময়ই সংকটের মধ্যে আছে। বাংলাদেশ প্যালেস্টাইনের এক অকৃত্রিম বন্ধু।

সভাপতির বক্তব্যে মো. শাহ আলম বলেন, আমরা প্যালেস্টাইন ভূখণ্ডে দখলদার শক্তির সাম্প্রতিক নৃশংসতাসহ প্যালেস্টাইনের বিরুদ্ধে সকল বেআইনি ও যুদ্ধংদেহী পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানাই। আগামী দিনে আমরা প্যালেস্টাইনের জনগণের আন্দোলনে সংহতি জানাতে আরও কর্মসূচি গ্রহণ করবো। বিশ্বব্যাপী সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন এবং দখলদারিত্বের প্রতিবাদে আমাদের দেশের সব সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করতে হবে।

রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ এবং দোসর ইসরায়েলকে পরাস্ত করতে হবে। গণহত্যাকারী ইসরায়েলকে জাতিসংঘ থেকে বহিষ্কার এবং আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যার বিচার করতে হবে। স্বাধীন সার্বভোউম প্যালেস্টাইন রাষ্ট্র ঘোষণা করতে হবে।

সোহরাব হাসান বলেন, বিশ্বব্যাপী মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের আগ্রাসন বিশ্ব শান্তির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার মদদে ইসরায়েল, ফিলিস্তিনের জনগণের উপর যে আগ্রাসন, গণহত্যা পরিচালনা করছে তার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাই। স্বাধীন প্যালেস্টাইন রাষ্ট্র গঠনের মধ্য দিয়েই এর একমাত্র স্থায়ী সমাধান সম্ভব।

শাহিন রহমান বলেন, ইসরাইলে মার্কিন সমরাস্ত্র প্রদান, নৌবহর প্রেরণসহ সব সহায়তা বন্ধ ও স্বাধীন প্যালেস্টাইনের দাবিতে বিশ্ববাসীকে সোচ্চার হতে হবে।

হাসান তারিক চৌধুরী বলেন, সব আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার সনদ চরমভাবে লংঘন করে সাম্রাজ্যবাদের প্রত্যক্ষ মদদে জায়নবাদী ইসরাইলী বাহিনী গাজাসহ পুরো প্যালেস্টাইন ভূখণ্ডে গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। যে পশ্চিমা দেশগুলো কথায় কথায় বিশ্বকে মানবাধিকারের সবক দেয়। তারা আজ প্যালেস্টাইনের গণহত্যা সম্পর্কে কার্যত নিরব। আরব লীগ এবং ওআইসির মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও এ প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ। পশ্চিমা বিশ্ব ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ নিয়ে যতটা সরব, গাজায় গণহত্যা নিয়ে ততটাই নীরব। এমনি প্রথমে তারা যুদ্ধবিরতিতেও ভেটো দিয়েছে। এই সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে রুখে দিয়ে ফিলিস্তিনের জনগণের মুক্তির লড়াইকে এগিয়ে নিতে হবে। অবিলম্বে প্যালেস্টাইনে ইসরায়েলী বাহিনীর গণহত্যা বন্ধ করতে হবে। জেরুজালেমকে রাজধানী ঘোষণা করে জাতিসংঘ স্বীকৃত স্বাধীন প্যালেস্টাইন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

সমাবেশে যুদ্ধবিরোধী গান পরিবেশন করেন উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীরা।

১৯৭৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ প্রতি বছর ২৯ নভেম্বর প্যালেস্টাইনের প্রতি সংহতি প্রকাশে আন্তর্জাতিক দিবসটি পালনের আহ্বান জানায়। এর ১০ বছর পরে ১৯৮৭ সালের ২৯ নভেম্বর প্যালেস্টাইন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। এরপর থেকে দিনটি আন্তর্জাতিক প্যালেস্টাইন সংহতি দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।