ঢাকা //
দ্রব্যমূল্য ক্রমাগত বৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষের জীবনে যখন হাঁসফাঁস অবস্থা, তখন ৬৫টি সেবা ও পণ্যের ওপর মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে।এই ভ্যাট আরোপ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে।
তবে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগামী বাজেটে ভ্যাট ও কর ভালোভাবে সমন্বয় করা হবে।
গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকরা ভ্যাট বাড়ানোর প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, কেন ভ্যাট ও শুল্ক বাড়ানো হয়েছিল কিছুদিন পর তা জানতে পারবেন। তবে আগামী বাজেটে ভ্যাট ও কর ভালোভাবে সমন্বয় করা হবে। এ সময় তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ভ্যাট যে পর্যায়ে বাড়ানো হয়েছে তাতে কি এমন যে পণ্যের মূল্য বাড়তে পারে। ওষুধ, মোবাইল, ফলের রসে কমানো হয়েছে। অথচ দুধের দাম বেড়েছে। এটাতো বাড়ার কথা নয়।
এর আগে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে ‘বিশেষ ওএমএস’ কর্মসূচির আওতায় সরাসরি কৃষিপণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবার ভূতাপেক্ষ (অতীতের কোনো সময়ে কার্যকর ধরে) অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এরপর ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক হয়। এতে ইউরিয়া সার ও পল্লী বিদ্যুতের জন্য স্টিল ক্রস আর্ম কেনার সিদ্ধান্ত হয়। দুটি বৈঠকে সভাপতিত্ব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা।
এ সময় সরকারি চাকরিজীবীদের মহার্ঘ্য ভাতা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক: চার দেশ ও স্থানীয় বাজার থেকে ৭৫৬ কোটি টাকার সার আমদানি ও কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয় এ কমিটির বৈঠকে। এ সারের পরিমাণ ১ লাখ ৫০ হাজার টন, যার মধ্যে ১ লাখ ২০ হাজার টন ইউরিয়া ও ৩০ হাজার টন ফসফরিক অ্যাসিড।
সার কেনার প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সরকারের বাফার মজুদ কমে গেলে বেসরকারি পর্যায়ে সারের মূল্যবৃদ্ধি করা হয়। এ জন্য আজকের বৈঠকে আমদানির অনুমতি দিয়ে মজুদ আরও বেশি করা হচ্ছে।
জানা গেছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফার্টিগ্লোব ডিস্ট্রিবিউশন লি. থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া আমদানি করা হবে। ব্যয় হবে ১৩২ কোটি টাকা। এছাড়া সৌদি আরবের সাবিক অ্যাগ্রো-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া আনা হবে। ব্যয় হবে ১৩২ কোটি টাকা। পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে কাতার অ্যানার্জি মার্কেটিং থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে প্রায় ১৩৯ কোটি টাকা। কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো), বাংলাদেশ থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ব্যয় হবে ১২৯ কোটি টাকা।
ওই বৈঠকে চট্টগ্রামের টিএসপিসিএলের জন্য আরব আমিরাতের মেসার্স জেনট্রেড এফজেডইর থেকে ১০ হাজার টন ও চীনের মেসার্স গুয়াংজি পেঙ্গুয়ে ইকো-টেকনোলজি কোং লি. থেকে ২০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক অ্যাসিড আমদানি করা হবে। এতে ব্যয় হবে ২২৪ কোটি টাকা।
এ ছাড়া পল্লী বিদ্যুতের জন্য ৭০ কোটি টাকার স্টিল ক্রস আর্ম কেনার সিদ্ধান্ত হয়। ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ বোর্ডের (বাপবিবো) বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়নের লক্ষ্যে ৩ লাখ ১৭ হাজার ৭১২টি স্টিল ক্রস আর্ম কেনা হবে।
মতামত জানান।